বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বসেছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় লোকসংগীতের উৎসব। আর এই উৎসবের দ্বিতীয় দিনে দর্শক মাতিয়েছেন ভিনদেশি সংগীতশিল্পীরা। তবে সবার শেষে মঞ্চে উঠে উত্তাপ ছড়িয়েছেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম।
বাংলার শেকড় সন্ধানী লোকসংগীতকে বিশ্বের দরবারে স্বমহিমায় তুলে ধরতে টানা চতুর্থবারের মত সান কমিউনিকেশন্স এবং সান ফাউন্ডেশন- এর উদ্যোগে চলছে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট-২০১৮’। শুক্রবার ছিলো উৎসবের দ্বিতীয় দিন। আর এদিন সন্ধ্যা ৬ থেকে শুরু হয়ে উৎসব চলে রাত ১২ টা পর্যন্ত।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে লোকসংগীতের সুরের আলোয় প্রথমবারের মত মঞ্চ আলোকিত করেছেন রাজশাহীর ফোকব্যান্ড স্বরব্যাঞ্জো। আন্তর্জাতিক শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন বাহরাইনের ফিউশন ব্যান্ড মাজায। ভারত থেকে ছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ফোক ঘরানার শিল্পী রঘু দিক্ষীত। প্রায় এক ঘন্টা ব্যাপী মঞ্চ মাতান তারা।
এরপর মঞ্চে উঠেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘তেহানো মিউজিক’- এ অনুপ্রাণিত গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদল ‘লস্ টেক্সমেনিয়াক্স’। তাদের পরিবেশনায় উঠে আসে ভিন্ন ধাঁচের লোকসংগীতের বহুমাত্রিক মনোমুগ্ধকর সুরের ধারা। স্টেডিয়াম ভর্তি সমস্ত দর্শক সুরের এই ঢেউ ভাসা তরঙ্গে আলোড়িত হন।
তবে দ্বিতীয় দিনে দর্শকের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন দেশীয় ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ। সবাই অপেক্ষা করছিলেন কখন মঞ্চে উঠবেন তিনি। দর্শক শ্রোতার অপেক্ষার অবসান হয় রাত পৌনে এগারোটায়। বিশাল লহর নিয়ে মঞ্চে উঠেন মমতাজ। উঠেই গানে গানে আত্মপরিচয় বর্ণনা করেন কুকিলকন্ঠী মমতাজ। বলেন, যতো গানই করুন ফোকই হচ্ছে তার প্রাণ। আর এই চর্চা তিনি চালিয়ে যেতে চান।
কিন্তু মমতাজের আত্মঅনুসন্ধানী লোকসংগীতের সাথে কেমন যেনো খাপছাড়া লাগছিলো দর্শকের আচরণ! মমতাজও যেন আঁচ করলেন বিষয়টি। আর তাইতো মাটির গান ছেড়ে ধরলেন ‘লোকাল বাস’! গর্জে উঠলো আর্মি স্টেডিয়ামে অবস্থানরত শ্রোতা দর্শক। মমতাজের গানের সাথে নাচলেন, গাইলেন তারা! এরপর মমতাজের কণ্ঠে উঠে এলা ‘সত্তা’ সিনেমার ‘না জানি কোন অপরাধে’ গানটি। কণ্ঠ মেলালেন দর্শক।
ঘড়িতে তখন ১২টা ছুঁইছঁই। এরইমধ্যে ঘন্টা খানেক গেয়ে ফেলেছেন মমতাজ। দর্শকের অনুরোধে এবার গেয়ে উঠলেন ‘পাঙ্খা’। হুল্লোড় পড়ে যায় গোটা স্টেডিয়ামে। নেচে গেয়ে মমতাজের সাথে তাল মেলান দর্শক।