গাজীপুরের টুরিস্ট স্পট ‘দ্য বেজ ক্যাম্প’কে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এই অভিযান পরিচালনা করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
দ্য বেজ ক্যাম্পের বিরুদ্ধে গ্রাহককে যথাযথ সেবা না দেয়ার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তাদের এ জরিমানা করা হয়।
শনিবারের এ অভিযান সম্পর্কে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার তার ফেসবুক ওয়ালে জানিয়েছেন।
তিনি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন: ‘‘রিসোর্টে শুরু হলো তদারকি অভিযান: BASE CAMP (রিসোর্ট টাইপ), গজারিয়াপাড়া, রাজেন্দ্রপুর, গাজীপুর কে ১,৫০,০০০/ ( এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) জরিমানা। ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।’’
শাহরিয়ার জানান: গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। বেজ ক্যাম্পকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়। শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী তাদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাকিব হাসনাত সুমন নামের একজন গ্রাহক।
তিনি সেই অভিযোগে জানান: তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘দ্য বেজ ক্যাম্প, বাংলাদেশ’ নামে একটি টুরিস্ট স্পটের বিজ্ঞাপন দেখে সপরিবারে সেখানে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে ভ্রমণের প্রায় এক মাস আগে গত ১৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ৫০ হাজার টাকা জমা দেন।
কিন্তু বেজক্যাম্প কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুত সেবা প্রদান করেনি। এমনকি বেজ ক্যাম্পের আশপাশে শৌচাগার না থাকা থেকে শুরু করে নানা অভিযোগ করেন।
রাকিব হাসনাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৯ জুন শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর শনিবার বেজক্যাম্পে অভিযান চালানো হয়।
এর আগে গত ৩ জুন মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ভোক্তা অধিদফতর থেকে বদলি করে তাকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে বলা হয়।
নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরির অভিযোগে অফিসার্স ক্লাব ও পাঞ্জাবির দাম বেশি নেয়ায় আড়ংকে জরিমানা করায় এ বদলি করা হয় বলে গুঞ্জন উঠে। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
এর পরদিনই ৪ জুন বদলি আদেশটি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ১২ জুন জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে তাৎক্ষণিক বদলির ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।
আড়ংয়ের ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার সময় যদিও আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তখনও বেশ কিছু বড় বড় জায়গায় হাত দিল বলে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হঠাৎ একটা ব্যবস্থা নেয়া হলো। আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।
তিনি বলেন, সাধারণ ছোট-খাটোদের ধরতে পারবে, আর বড় অর্থশালী সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না- এটাতো হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমি আজকেই বলে দিচ্ছি তাকে (মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার) ওই দায়িত্বই দিতে হবে। কারণ খুব দামি দামি জায়গা, তাদের যে খারাপ কিছু থাকবে না বা হবে না যারা ওগুলোর মালিক তারাও তো এই গ্যারান্টি দিতে পারেন না।
সেখানে কেন পরীক্ষা করতে পারবে না, পরীক্ষা করার অধিকারটা কেন থাকবে না? অপরাধী সে অপরাধী। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলেই দেখা যায় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে এবং যারা এই কাজটি করতে যায় তারা অপরাধী হয়ে যায়।