বর্তমানে ফুল শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। তাই বাংলাদেশে এ শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন আবশ্যক বলে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আবুল কাসেম খান একথা বলেন।
আগামী ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাওয়ার এক্সিবিশন অ্যান্ড কনফারেন্স ২০১৮’ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আবুল কাসেম খান জানান, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি)-এর তথ্যমতে, সারা পৃথিবীতে ফুলের বাজার প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক বাজারে ফুল রপ্তানির বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারে।
ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ফুল রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬ হাজার ডলার, যেখানে বর্তমানে সার্বিকভাবে ফুলের বাজার মূল্য ৮শ- ১২শ কোটি টাকা।’
ফুলখাতের উন্নয়নে কিছু পরামর্শ দিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এর সঙ্গে জড়িত কৃষক ও উদ্যোক্তাদের স্বল্প হারে ঋণ সুবিধা প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তি প্রাপ্তি ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদান, উন্নত ও নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ করা, ওয়্যার হাউজ ও কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ এবং সর্বোপরি অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, ‘কৃষি খাতের অগ্রগতির লক্ষ্যে বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে সরকারকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি জানান, বর্তমানে ২৩টি জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ৫০ জাতের ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হচ্ছে এবং স্থানীয়ভাবে ফুলের বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইউএসএআইডি এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় আগামী ৬-৮ ডিসেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাওয়ার এক্সিবিশন অ্যান্ড কনফারেন্স ২০১৮’-এ প্রায় ৭০টি স্টলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা তাদের ফুল ও ফুল সংশ্লিষ্ট পণ্য প্রদর্শন করবেন। মেলায় থাইল্যান্ড, ভারত এবং নেপালের ১২টি স্টল থাকবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই ইভেন্টে ‘বাংলাদেশে ফুল খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা’ ও ‘ফুল চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা’ বিষয়ে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মলেনে ডিসিসিআিই সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, ইউএসএইড’স এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস্ (এভিসি) প্রকল্পরে চিফ অব পার্টি লি রোজনার, ডেপুটি চিফ অব পার্টি বানি আমিন, বাংলাদেশ ফুল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।