প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার প্রথমবারের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ে মাটির ও মানুষের ফিরে চল মাটির টানে কর্মসূচিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী কৃষকের মতো নিজের হাতে ফসল রোপন করেছেন গাজীপুরের প্রত্যন্ত এক গ্রামের মাঠে।
শুরুটা পাঁচ বছর আগে নরসিংদীর খৈয়নকুট গ্রাম থেকে। আমন আর বোরো মৌসুমে বিগত চারবছরে ফিরে চল মাটির টানের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ১০টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষার্থী।
দীর্ঘ বাছাইপর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী গাজীপুরের দিনমজুরের হাটে। একজন জমি মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার নুরুন গ্রামের মাঠে শুরু করে কৃষিকাজ।
ক্ষেত প্রস্তুত থেকে শুরু করে ধানের চারা তোলা আর সেই চারা নিজের হাতে রোপনের অভিজ্ঞতা জন্ম দেয় নতুন উপলব্ধির ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, কৃষক যে আসলে কত কষ্ট করে ফসল ফলায় বাজার থেকে ৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি চাল কিনে সেটা আমরা বুঝতে পারবো না। তাই সবারই মাটির সাথে যোগাযোগ থাকা জরুরি। তাহলে ব্যাপারটা বোঝা প্রায় অসম্ভব।
তারা ভাবার সুযোগ পায় কৃষিক্ষেত্রে নতুন কিছু পরিবর্তনের কথাও। তারা বলেন, সরাসরি কাজ না করলে আসলে বোঝা যাবে না। কৃষকদের আসলে সবক্ষেত্রে সমান মর্যাদা দেওয়া উচিত।
পাঁচ বছরের এই কার্যক্রমের একটি গঠনমূলক সাফল্য আছে বলে মনে করেন কর্মসূচির উদ্যোক্তা শাইখ সিরাজ।
তিনি বলেন, ‘কৃষি কাজ শুধু মাত্র কৃষকের হতে পারে। কিন্তু শহরের মানুষ যদি এটা নিয়ে না ভাবে তাহলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এটার কোনো প্রভাব পড়বে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে এটা ছিলে একটা ভয়ংকর কাজ। এটা কিভাবে করে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কৃষি নিয়ে নগরের মানুষও ভাবছে, কৃষকের প্রতি মর্যাদার জায়গাটুকু তৈরি হয়েছে এবং এখন যারা এটা করছে তাদের কাছে এখন এটা আর কঠিন কাজ না।’
এ ধরণের প্রচেষ্টা কৃষক বা কৃষি শ্রমিকদের মর্যাদা বাড়ানোর সঙ্গে কৃষিখাতকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এলাকাবাসীও।
তারা বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি এটা জানা প্রয়োজন। কৃষি কাজটা যে কত কষ্টের সেটা উপলব্ধি করতে পারবে।
তারা আশা করেন, এই কাজ প্রেরণা যোগাবে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীকেও।