স্বাধীনতার দিন। বিকাল পাঁচটা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তখন মানুষের বেশ জটলা। শহীদ মিনারের ডান দিকে অসংখ্য শ্রোতার সামনে দেশের গান পরিবেশন করছে একটি শিল্পগোষ্ঠি। লাইভ বাজছে ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে/ রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল’! সবাই বেশ মনযোগি শ্রোতা। স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে অনেক উৎসাহি মানুষের ভিড় শহীদ মিনারের সামনের রাস্তাগুলোতেও। এরকম পরিবেশের ভেতর দিয়ে শহীদ মিনার প্রবেশ করেন প্রায় ছয় ফুট লম্বা গম্ভীর চেহেরার এক মানুষ। তার পরণে লাল পাঞ্জাবী, গলায় লম্বা কালো উর্ণা আর সাদা পায়জামা। মোটা গোফে আর কালো চশমায় রহস্যময় দৃষ্টি তার।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশের পরেই সবার দৃষ্টি তার দিকে! এসময় তার সঙ্গে দেখা যায় দেশের ছোট ও বড় পর্দার আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চুকে। মানুষের আন্দাজ করতে বাকি থাকে না, ছয় ফুট লম্বা মানুষটিও কোনো অভিনেতায় হবেন!
মুখটা বেশ পরিচিত। প্রথম দেখায় চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু কেউ ঠাওর করে উঠতে পারছেন না। আগন্তুক লোকটির নাম যশপাল শর্মা। বলিউডের স্বনামধন্য অভিনেতা তিনি। স্বাধীনতার দিনে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দেখতে এসেছেন। সঙ্গে এসেছেন অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু। বিকাল পাঁচটা থেকে প্রায় ত্রিশ মিনিটের মতো তিনি সেখানে ছিলেন।
সঙ্গে থাকা অনেকেই ভাষা আন্দোলনের সেম্বলিক শহীদ মিনার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইছিলেন। কিন্তু যশপাল আগে আগেই সবাইকে বলে দিলেন, তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস পুরোটাই জানেন। আর জানেন বলেই ভাষা আন্দোলনের উপর নির্মিতব্য ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ছবি ‘ফাগুন হাওয়ায়’ অভিনয় করতে রাজি হয়েছেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনেকেই এ সময় এগিয়ে এসে বলিউডের এই অভিনেতার সঙ্গে ছবি তুলেন। কথা বলেন।
শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে আসবেন, তখন দৌড়ে আসেন কয়েকজন নারী। এসে বলেন, যশপালকে তারা চিনতে পেরেছেন, কিন্তু প্রথম দেখায় বিশ্বাস করতে পারেননি যে তিনি বাংলাদেশে। মুহূর্তেই যশপালের সঙ্গে একটি সেলফি তোলার আবদার জানান তারা। যশপালও মৃদু হেসে তাদের সেলফিতে অংশ নেন।
মূলত তৌকীর আহমেদের আসন্ন সিনেমা ‘ফাগুন হাওয়ায়’ অভিনয় করছেন যশপাল। সে লক্ষ্যেই চলতি মাসে তিনি ঢাকায় এসেছেন শুটিংয়ে অংশ নিতে। খুলনায় টানা শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি। সোমবার ঢাকায় অবস্থান করায় তিনি শহর ঘুরতে বেরিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন তিনি।