খুব বেশি কঠিন হল না লক্ষ্যটা! ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে ১৯৯ রান করলেই চলবে শ্রীলঙ্কার। উল্টোটা হলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে জিম্বাবুয়ে।
রোববার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করে ৪৪ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার সময় ১৯৮ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম দেখায় জয় তুলে নিয়েছে দলটি।
ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম সাক্ষাতে অদম্য ছিলেন দুই ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সলোমন মায়ার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিলেন দলকে। এদিনও দারুণ শুরুই করেছিলেন। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরুর পর প্রথম দশ ওভার ব্যাট করেন তারা।
দারুণ শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি দুজন। দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়েও। থিসারা পেরেরার করা ইনিংসের দশম ওভারের শেষ বলে আউট হন মাসাকাদজা। ব্যক্তিগত ২০ রানে থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দেন এ ওপেনার।
পাঁচ রান পর ক্রেইগ আরভিন (২) ফিরে যান। এবারও শিকারি সেই পেরেরা, ক্যাচ নেন থারাঙ্গাই। সাজঘরে ফিরতে দেরি হয়নি মায়ারেরও। ২১ রান করে ফিরেছেন পেরেরা বলে ডিকেভেল্লার গ্লাভসে ধরা পড়ে।
ওই তিন উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেন পেরেরা। সেটা হাঁসফাঁস অবস্থায় টেনে নেন সান্দাকান। ইনফর্ম সিকান্দার রাজাকে (৯) মেন্ডিসের ক্যাচ বানিয়ে।
জিম্বাবুয়ে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্রেন্ডন টেলর ও ম্যালকম ওয়ালারের ব্যাটে। দুজনে ৬৬ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। ওয়ালারের (২৪) বিদায়ে ভাঙে জুটি। পরে পিটার মুরও (০) সাজঘরে হাঁটা দেন দ্রুত।
টেলর সেখান থেকে লড়াইয়ের সঙ্গী পান অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারকে। নিজে ফিরেছেন ৫৮ রানে, দলকে দুইশর কোটা দেখিয়ে। ৬ চারে ৮০ বলের ইনিংস টেলরের। আসা-যাওয়ার মিছিলে পরে অবশ্য দুইশ ছুঁতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ক্রেমারের ৩৪ রান যা একটু লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছে।
থিসারা পেরেরা ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার। লেজ মুড়ে দেয়া ফার্নান্দো ২৮ রানে ৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন। সান্দাকানের দখলে গেছে ২ উইকেট।
ফাইনালের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে এই ম্যাচটা জিততেই হবে শ্রীলঙ্কাকে। ২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডেতে ৩৫ রানে অলআউট করেছিল তারা। যেটি ওডিআইতে সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড। তার আগে ৮ ডিসেম্বর ২০০১ সালে এই জিম্বাবুয়েকেই ৩৮ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল লঙ্কানরা। তবে মজার বিষয়, ২১ জানুয়ারি ২০১৮তে সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই আন্ডারডগ হয়ে মাঠে লঙ্কানরা।
ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দেখায় সুবিধা করতে পারেনি লঙ্কানরা। হেরেছিল ১২ রানে। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি হাথুরুসিংহের দল। টাইগাররা ৩২০ রানের সংগ্রহ গড়ে ১৬৩ রানে নিজেদের রেকর্ড জয় তুলে নেয়।
লঙ্কানদের টানা দুই হারে কোন পয়েন্ট অর্জন সম্ভব হয়নি। সেখানে জিম্বাবুয়ে তাদের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে জিতে ৪ পয়েন্ট জমিয়ে রেখেছে। রোববার জিততে পারলে ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে নিশ্চিত। না পারলে অনেক হিসাব-কেতাবে যেতে হবে। বাংলাদেশের বিপক্ষে দুদলেরই একটি করে ম্যাচ বাকি।
তবে স্বাগতিকদের হিসাবটা সোজা। মাশরাফীর দল ইতোমধ্যেই ফাইনালের টিকিট কেটে ফেলেছে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই। প্রথম দুই জয়ে বোনাসসহ লাল-সবুজদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট।