অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের টেস্ট জয় লেখা হয়ে যেত পারত ২০০৬ সালে ফতুল্লায়। প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশ ৩০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছিল অজিদের। উপমহাদেশে চতুর্থ ইনিংসে যাদের ২০০ কিংবা তার বেশি রান তাড়া করে জয়ের ইতিহাস ছিল না, তারাই কিনা ওই কঠিন চ্যালেঞ্জ জয় করে ফেলে রিকি পন্টিংয়ের ১১৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে। ১১ বছর পর এবার যখন মিরপুরে দল দুটি তেমনি এক লড়াইয়ে মুখোমুখি, স্মৃতিতে আসছে ফতুল্লা টেস্ট।
সেই ম্যাচে দারুণ লড়াইয়ের পর পন্টিংদের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছিল হাবিবুল বাশারের দল। উপমহাদেশে অজিদের দুইশ’র বেশি রান তাড়া করে জয় পাওয়া ম্যাচ এখনও সেটিই।
মিরপুরে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৫ রানের টার্গেট দিয়েছে তামিম-মুশফিকরা। জয়ের আশায় আছে কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। গত বছরের অক্টোবরে ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের টার্গেট দিয়ে ১০৮ রানে ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। মিরাজ (৬) ও সাকিব (৪) মিলে তুলে নিয়েছিলেন ১০টি উইকেট।
ওই টেস্টে দু’দলের ৪০ উইকেটের মধ্যে ৩২টি নিয়েছিলেন স্পিনাররা। চলমান টেস্টেও ৩০ উইকেটের ২৪টি নিয়েছেন স্পিনাররা, দুইটি রান আউট, উইকেট পাওয়া পেসারদের মধ্যে একমাত্র প্যাট কামিন্স দুই ইনিংস মিলে নিয়েছে ৪ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সাকিব নিয়েছেন ৫টা, মিরাজ ৩টা। তাইজুল ১টা। এই ত্রয়ীর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। কেননা ইংল্যান্ড সিরিজের মতো এবারও মধ্যমণি স্পিনাররা।
স্পিনই বাংলাদেশের শক্তি। আগে যে স্পিনে খারাপ ছিল তা নয়। ফতুল্লায় মোহাম্মদ রফিক, এনামুল হকরা (জুনিয়র) তো ছিলেন। কিন্তু তখন হোম অ্যাডভানটেজ নেওয়ার ব্যাপারটাই তো শেখা হয়নি। এখনকার বাংলাদেশ অনেক পরিণত। পরিকল্পনা নিয়ে খেলে, কখনও কখনও বাস্তবায়ন হয় কখনও হয় না। বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে আউটের পেছনে ছিল মুশফিকের পরিকল্পনা, বল হাতে তা বাস্তবায়ন করেন মিরাজ।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে দেখা যায় পরিকল্পনার ছাপ। যে তামিমকে মানুষ চিনতে ধুমধাড়াক্কা একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে। সময়ের ব্যবধানে সেই তামিম দলের পরিস্থিতির প্রয়োজন মেটাতে জানা ব্যাটসম্যানদের একজন।
মিরপুরে টেস্ট তৃতীয় দিনের পড়ন্ত বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া, সময় যত গড়িয়েছে তত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে মিরপুরের উইকেট। মিরপুর টেস্ট যে স্পিনারদের হতে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের হাসি চওড়া হচ্ছে সাকিব-মিরাজ-তাইজুলদের মতো স্পিনার আছেন বলেই।
ছবি: সাকিব উল হাসান