ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে: দুপুর নাগাদ ফণীর প্রভাবে দমকা ও ঝড়ো হওয়া শুরু হওয়ার সম্ভবনা থাকলেও তার আগে এখন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।
তারা জানায়: মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী।
আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: একটি ঘূর্ণিঝড় যখন তৈরী হয় তা এক থেকে দেড়শ’ কিলোমিটারের মধ্যে লেজ আকারে বিস্তার করে। এই লেজে খণ্ড খণ্ড মেঘ থাকে। যার প্রভাবেই এখন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী ইতোমধ্যে আঘাত হেনেছে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে বলা হচ্ছে: উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন মধ্য-পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
‘‘এটি আজ সকাল ৬টায় মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বিকেল নাগাদ ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এবং পরবর্তীতে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে আজ মধ্যরাত নাগাদ খুলনা তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
খুলনা ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় দুপুর নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় এর অগ্রবর্তী অংশ প্রভাব ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হওয়া আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তার অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, চাঁদপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরা নৌকা ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।