চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ফজল মন্ডল গ্রেপ্তার না হলে আমরণ অনশনে যাবেন সাংবাদিকরা

টাঙ্গাইলে জুয়ার আসরের সচিত্র সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মাদক সম্রাট ফজল মন্ডল ও তার সহযোগীরা আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনী’র নাগালের বাইরে।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর এমন বর্বরচিত সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন গণমাধ্যমের সাবাদিকরা।

ওই অবস্থান কর্মসূচি থেকে তারা বলেছেন: অবিলম্বে ফজল মন্ডল এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা না হলে টাঙ্গাইলের সাংবাদিক সমাজ অচিরেই আমরণ অনশনের মতো কঠিন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।

একই সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর পুলিশের ভূমিকা লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেছে তারা।

হামলার রাতেই ঘটনার অন্যতম শিকার বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি’র টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সোহেল তালুকদার বাদি হয়ে ভূঞাপুর থানায় ফজল মন্ডলকে প্রধান আসামি করে তার ৮ সহযোগীর নামসহ শতাধিক অজ্ঞাতনামা জুয়াড়ির বিরুদ্ধে মামলা করে। এ ঘটনার পরদিন শুক্রবার থেকে টাঙ্গাইলে সাংবাদিকরা দোষীদের গ্রেপ্তারে আন্দোলন শুরু করে।

পরবর্তীতে ওই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গণের নেতা এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

তাদের অভিযোগ: হামলার পর প্রথম তিন দিন ফজল মন্ডল এবং তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে মাদক-জুয়া-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে দেশজুড়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করছেন, সেখানে অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তারে প্রশাসন কেন কোনো ব্যবস্থা নিলো না?

আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর এমন আচরণে ক্ষোভ বিরাজ করছে টাঙ্গাইলের সর্বত্র।

হামলার শিকার সোহেল তালুকদার অভিযোগ করেছেন: শুরুতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সামনে দিয়ে ফজল মন্ডল তার গুণ্ডাবাহিনী নিয়ে ঘুরে বেড়ালেও মামলার বিপরীতে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যখন টাঙ্গাইলের সাংবাদিক সমাজ এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ফজল বাহিনীর গ্রেপ্তারের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসলো, তখন অপরাধীরা গা ডাকা দিয়েছে। সাংবাদিক সমাজের ওপর হামলার পর পুলিশের যে অসহযোগিতা আমরা দেখেছি, তা আমাদের লজ্জা দেয়।

অবিলম্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলার মূলহোতা মাদক সম্রাট ফজল মন্ডলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন: প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহ আলম প্রামানি, সাবেক সভাপতি আসাদুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সহ-সভাপতি আতোয়ার রহমান মিন্টু ও মিজানুর রহমানসহ অনেকে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জুয়ার আসরের সচিত্র সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হন বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি’র  টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সোহেল তালুকদার, ক্যামেরা পারর্সন আশিকুর রহমান, দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক অভিজিৎ ঘোষ, দৈনিক একুশের বাণী পত্রিকার সাংবাদিক হৃদয় মন্ডলসহ আরো দুইজন।

এসময় সাংবাদিকদের কাছে থাকা দু’টি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় ফজল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়। ওইদিন রাতেই সোহেল তালুকদার ফজল মন্ডলকে প্রধান আসামী করে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।