প্রাতিষ্ঠানিক হিসাবে যুক্ত না হলেও বর্জ্য প্লাস্টিক রিসাইক্লিং খাতে থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান প্রায় ২ হাজার ৮ কোটি টাকার। রাজধানীর পুরান ঢাকার ৩০০ কারখানায় রিসাইক্লিং থেকে তৈরি হচ্ছে তৈজস প্লাস্টিক পণ্য। রিসাইক্লিং প্লাস্টিক কারখানার মালিক ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনীতির মূল হিসেবে এটা স্পষ্ট করে যুক্ত না হলেও প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ায় এ অজানা অর্থনীতির আকারও বাড়ছে।
ইদ্রিস আলী, হাজার হাজার প্লাষ্টিক বোতল নিয়ে যার কারবার। চারবছর আগে ঢাকায় এসেছিলেন। পেটের দায়ে ঢাকা এসে অশিক্ষিত ইদ্রিস পড়েন বড় বিপদে। কাজ না থাকায় বোতল কুড়াতেন। চারবছরের মধ্যে পরিত্যক্ত বোতলই হয়ে উঠে তার ব্যবসার মুল উপাদান।
আশিক ই রসুল প্লাষ্টিক কারখানার মালিক শেখ নাজির হোসাইন বলেন, টোকাইরা এই বোতলগুলো পথ-ঘাট থেকে কিনে এনে আমাদের কাছে বিক্রি করে। আমরা রিসাইক্লিং করে দেশের বাইরে পাঠাই।
ঢাকার কামরাঙ্গির চর লোহার ব্রীজের নীচে যেখানে ইদ্রিসের বোতলের স্তুপ তার পাশেই রিসাইক্লিং কারখানা। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টন প্লাস্টিক রিসাইক্লিং হয় ওই কারখানায়।
ঢাকায় এ ধরনের কারখানাতে রিসাইক্লিং হওয়া প্লাস্টিক দানার একটি অংশ রপ্তানি হয় চীনে। বেশির ভাগ অংশ চলে যায় পুরোনো ঢাকার কারমরাঙ্গিরচরসহ ইসলামবাগ, লালবাগের রিসাইক্লিং প্লাস্টিক পন্য তৈরির কারখানায়। মাত্র ১০ বছরে এধরনের কারখানা হয়েছে প্রায় ৩শ।
উদ্যাক্তারা জানিয়েছেন, ছোট বড় প্রতিটি কারখানায় গড়ে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি হয়। প্রতিমাসে মোট বিক্রির পরিমান দাড়ায় প্রায় ২৭০ কোটি টাকা।
দেশের অর্থনীতির মূল হিসাবে প্লাস্টিক পণ্যের বাজার, তার আকার নিয়ে আলোচনা রয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে তার হিসাবও আছে। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক গড়ে ওঠা রিসাইক্লিং প্লাস্টিক কারখানার আকার ও অর্থর্নীতি এবং তার অবদান এখনো স্বীকৃত নয়।
সিপিডি অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্লাষ্টিক কী পরিমাণ রপ্তানি হচ্ছে এবং তা একটা বড় ভূমিকা রাখছে, সেই হিসেবগুলো সঠিকভাবে ‘জাতীয় হিসেব’ তথ্য পাওয়া যায় না।
দেশের বার্ষিক আমদানি রপ্তানি বা কর্মসংস্থানের হিসাবে আসুক বা না আসুক , প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প হিসেবে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানা অদৃশ্য অর্থনীতির নিরব বিস্তার।