চীনের বেইজিংয়ের এক কলামিস্ট হংকং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন। জিয়া জিয়া নামের ওই কলামিস্ট গত মঙ্গলবার হংকংগামী প্লেনে চড়ার আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা বলেন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন জিয়া জিয়ার আইনজীবী।
দেশটির একটি জাতীয় দৈনিক অ্যাপল ডেইলি জিয়া জিয়ার স্ত্রীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে তার শেষ যোগাযোগ হয়েছিলো মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতর ৮টার দিকে। জিয়া জিয়া তখন জানান, তিনি হংকং যাওয়ার জন্য উড়োজাহাজে চড়তে যাচ্ছেন।
কিন্তু সেই রাতেই হংকংয়ে এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানে আর পৌঁছাননি। পরদিন একটি লাঞ্চ অ্যাপয়েন্টমেন্টেও যাননি জিয়া জিয়া।
কিছুদিন আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পদত্যাগ চেয়ে গত ৪ মার্চ প্রকাশিত একটি বেনামী চিঠির কারণে বেশ আলোচনায় আসেন ত্রিশোর্ধ এই কলামিস্ট। চিঠিটি রাষ্ট্র পরিচালিত একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই তা নামিয়ে ফেলা হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট জিনপিং অতিরিক্ত ক্ষমতা নিজের কুক্ষিগত করে রেখেছে এবং নিজেকে ‘পূজনীয়’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় আছেন। তাই তার পদত্যাগ করা দরকার। চিঠিতে জিনপিংয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করা হয়।
জিয়া জিয়া ওই চিঠি প্রকাশের ব্যাপারে আগেই তার এক সম্পাদক বন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন বলে দাবি করা হলেও ওই চিঠির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন জিয়া জিয়া। ‘লয়্যাল কমিউনিস্ট পার্টি সাপোর্টারস’ নামে লেখা চিঠিটি আসলে কে লিখেছে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জিয়া জিয়ার আইনজীবী ই্য়ান শিন বলেন, ‘কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে এবং কেনো, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই বের করতে পারিনি। খুব সম্ভব তাকে বিমানবন্দর থেকেই অপহরণ করা হয়েছে।’ তিনি আরো জানান, গায়েব হওয়া কলামিস্টের ফ্লাইট বুকিং রেকর্ড চেষ্টা করেও হাতে পাওয়া যায়নি। তিনি এবং জিয়া জিয়ার স্ত্রী ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের ভাবমূর্তি ধরে রাখার জন্য চীনে চলমান নানা প্রচারণার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে চলা সেন্সরশিপের ধারাবাহিকতায়ই এই গুমের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।