গত কয়েকদিন থেকে আমি ছটফট করছি, সত্যিকারের কোনো কাজ করতে পারছি না। যে মানুষগুলোকে দেশের মাটিতে খুন করা হচ্ছে, জখম করা হচ্ছে তারা আমার চেনা মানুষ, পরিচিত এবং ঘনিষ্ঠ মানুষ। টুটুলের ছেলে এবং মেয়ের সাথে তোলা একটা ছবি আমার অফিস ঘরে বহুদিন থেকে টানানো আছে। দীপন বইয়ের প্রকাশক, বই প্রকাশের কারণে বহুদিন আমার বাসায় এসেছে। তার মত সুদর্শন পরিশীলিত এবং মার্জিত মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। দেশে আসার পর সেই সাতানব্বই সালে দীপন আমাকে তার বাবার সম্পাদিত ‘লোকায়ত’ নামে একটা সাময়িকপত্রের সংকলন উপহার দিয়েছিল। যখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম তখন এই দেশের মানুষ কীভাবে ভাবনা চিন্তা করত আমি এই সংকলনটি থেকে জানতে পেরেছিলাম। দীপন এখন নেই, খবরের কাগজে প্রত্যেকবার তার হাসিখুশী মুখটি দেখে বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠে। আমি বিশ্বাস করতে পারি না মুক্তচিন্তার একজন মানুষের বই প্রকাশ করার জন্য কাউকে এরকম নির্মমভাবে হত্যা করা সম্ভব। আমাদের দেশে এরকম কিছু মানুষ গড়ে উঠেছে, আমরা সেটা সহ্য করেছি, চোখ বুঁজে না দেখার ভান করেছি, অস্বীকার করেছি সেই দায় থেকে আমরা কী কখনো মুক্তি পেতে পারব? দরজা ভেঙ্গে রক্তস্নাত সন্তানের মৃতদেহ আবিস্কার করার হাহাকার কী এই দেশের সকল বাবার হাহাকার নয়?
শুদ্ধস্বরের প্রকাশক টুটুল আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছে। তার সাথে আহত রনদীপম বসু এবং তারেক রহিম ধীরে ধীরে হাসপাতালে সুস্থ হয়ে উঠছে। হাতে মুখে মাথায় আঘাত, শরীরে গুলি নিয়ে একেকজন হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে কিন্তু তারপরও আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি কারণ তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। আমাদের চাওয়া খুব কম, সারা শরীর ক্ষত বিক্ষত হয়ে শুধু প্রাণে বেঁচে গেলেই আজকাল আমাদের মনে আমরা বুঝি অনেক সৌভাগ্যবান। আমরা বেশী কিছু চাই না, শুধু প্রাণটুকু চাই, কিন্তু সব সময় সেটাও পাই না।
শুধুমাত্র মুক্তবুদ্ধির চর্চা করার জন্যে ধর্মান্ধ মানুষেরা প্রথমে লেখকদের হত্যা করেছে। প্রথমে তাদের হত্যা করেছে ঘরের বাইরে, তারপর ধীরে ধীরে তাদের সাহস বেড়েছে তখন তারা হত্যা করার জন্যে তাদের বাড়ীর বাইরে হানা দিয়েছে। লেখকদের হত্যা করার পর তারা সেই লেখকদের প্রকাশকদের হত্যা করতে শুরু করেছে। এরপর নিশ্চয়ই বই বিক্রেতার উপর হামলা করবে তারপর পাঠকদের উপর হামলা শুরু হবে। যত বিচিত্র মানসিকতাই হয়ে থাকুক না কেন এই ধর্মান্ধ হত্যাকারী মানুষদের কাজকর্ম আমি খানিকটা হলেও বুঝতে পারি। কিন্তু আমি এই সরকারের কাজকর্ম হঠাৎ করে আর বুঝতে পারি না। সর্বশেষ উদাহরণটি দেখা যাক, একই দিনে প্রায় একই সময়ে দুটি ভিন্ন জায়গায় একই লেখকের দুজন প্রকাশকের উপর একই ভাবে হামলা হলো এবং একজন মারাই গেলেন, তার উপর বক্তব্য দিতে গিয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বললেন, এগুলো ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা। প্রথমে রাজীব, তারপর অভিজিৎ, ওয়াসিকুর, অনন্ত, নিলয় হয়ে সর্বশেষে দীপন, সবাই একেবারে একই পদ্ধতিতে খুনীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে হয় নাস্তিকতার অভিযোগ, না হয় নাস্তিক মানুষের বই প্রকাশের অভিযোগ। তারপরও যদি এগুলো ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চিত ভাবেই হয় আমি ‘বিচ্ছিন্ন’ শব্দটির অর্থ জানি না, না হয় আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘বিচ্ছিন্ন’ শব্দটির অর্থ জানেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের কথা শুনে আমরা এক ধরণের আতংক অনুভব করেছি, রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব যার উপরে দেয়া হয়েছে তিনি যদি এখনও এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের মূল বিষয়টি ধরতে না পারেন যে এগুলো মোটেও বিচ্ছিন্ন নয়, এগুলো সব এক সূত্রে গাঁথা তাহলে কার দিকে মুখ তুলে চাইব? বিচ্ছিন্ন ঘটনা মানেই গুরুত্বহীন ঘটনা, এতো বড় একটা বিষয়কে চোখের পলকে গুরুত্বহীন করে দেয়া হলে আমরা কী হতবুদ্ধি হয়ে যাই না!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যটি আমাদের জন্যে যথেষ্ট বড় একটি ধাক্কা ছিল, তার সাথে যোগ হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্য। দীপনের বাবা বুকে অনেক বড় কষ্ট এবং ক্ষোভ নিয়ে বলেছিলেন, তিনি তাঁর ছেলে হত্যার বিচার চান না। শুধু দীপনের বাবা নয় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও বলেছেন, তিনিও তার স্বামী হত্যার বিচার চান না। শুধু তাই নয়, তিনি বলেছেন যে নিশ্চিত ভাবেই টুটুল এবং দীপনের স্ত্রী, অনন্তের বোন কিংবা রাজীব, বাবু অথবা নিলয়ের বন্ধুরাও নিশ্চয়ই বিচার চায় না। দীপনের বাবা আবুল কাসেম ফজলুল হক কিংবা অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার বক্তব্যের ভেতরের দুঃখ, কষ্ট বা অভিমানটুকু বুঝতে আমাদের কারো এতোটুকু সমস্যা হয়নি। যে দেশের সরকারের কাছে ব্লগার বা নাস্তিক নামের এই অভিশপ্ত মানুষগুলোর প্রাণের বিন্দুমাত্র দাম নেই, যে দেশের সরকার মনে করে তাদের মৃত্যু নিয়ে প্রকাশ্যে একটি বাক্যও উচ্চারণ করা যাবে না কারণ সেটি ‘স্পর্শকাতর’, যে দেশের বড় একটা অংশ মনে করে এই মানুষগুলো নিজেরাই তাদের উপর হত্যাকাণ্ডের দায় টেনে এনেছে সেই দেশে বিচারের দাবী করে কে নিজের আত্নসম্মানটুকু বিসর্জন দেবে? এই দেশে ধর্মান্ধ জঙ্গী গড়ে তোলার প্রক্রিয়া বন্ধ না করে, সমাজকে আরো সহনশীল না করে শুধুমাত্র কয়েকজন কমবয়সী তরুণ হত্যাকারীদের বিচার করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কী লাভ?
তাই দীপনের বাবার বিচার না চাওয়ার পেছনের হাহাকারটি বুঝতে আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি কিন্তু আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সেটা বুঝার চেষ্টাও করলেন না। তিনি দীপন এবং তার বাবাকে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী হিসেবে ধরে নিয়ে একেবারে ঢালাও একটি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, ‘হত্যাকারীর আদর্শে বিশ্বাসী বলেই পুত্র দীপন হত্যার বিচার চাননি বাবা আবুল কাসেম ফজলুল হক।’
কী ভয়ংকর নিষ্ঠুর একটা কথা, বাবা সন্তান হত্যাকারীর আদর্শে বিশ্বাসী, অর্থাৎ পরোক্ষভাবে হলেও সন্তান হত্যার জন্যে বাবাও কোনো না কোনো ভাবে দায়ী। সংবাদপত্রে এই বাক্যে নিজের চোখে দেখেও আমার বিশ্বাস হতে চায় না। সদ্য সন্তান সন্তানহারা একজন বাবা কে উদ্দেশ্য করে একজন মানুষ এরকম একটা উক্তি করতে পারে? রাজনীতিবিদ হলেও কী পারে? এই দেশে সত্যিই কী এরকম মানুষ আছেন যারা এভাবে চিন্তা করতে পারে? না কী এটাই সরকারের মনের কথা কোনো না কোনো ভাবে কথাটি গণমাধ্যমে প্রচার করার কাজটি মাহবুব উল আলম হানিফ করে দিয়েছেন? আমি দেশের সকল মানুষের পক্ষ থেকে দীপনের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাই যে এই দেশের একজন রাজনীতিবিদের মুখ থেকে এরকম একটি উক্তি বের হয়েছে।
অথচ আমার চোখে এখনও ছবিটি জ্বলজ্বল করছে যেখানে জামাতে ইসলামীর একজন নেতা হাস্যোজ্বল মাহবুব উল আলম হানিফের সাথে হাত মিলাচ্ছেন এবং ছবির নিচে লেখা আছে সেই নেতা জামাতে ইসলামী ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফের নির্বাচনে প্রচারণা করছেন। তখনই ছবিটি এবং ছবির নিচের খবরটি আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল, এখন দীপনের বাবাকে উদ্দেশ্য করে করা তার এই উক্তিটির কথা পড়ে হঠাৎ করে দুটো বিষয়টিকে এক ধরণের উৎকট রসিকতা বলে মানে হচ্ছে।
খবরের কাগজে দেখেছি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ তার এই উক্তিটির জন্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পুরোপুরি লজ্জিত বিব্রত অনুশোচনার যন্ত্রণায় জর্জরিত মানুষের দুঃখ প্রকাশ নয়, তার বক্তব্যের একটি নতুন ব্যাখ্যা। তিনি বলতে চেয়েছিলেন, হত্যাকারীর বিচার না চাইলে হত্যাকারীরাই উৎসাহিত হয়ে যাবে! তিনি যেটি বলতে চেয়েছিলেন এবং যেটি বলেছিলেন এই দুটি বাক্যের মাঝে আকাশ পাতাল পার্থক্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য পড়ে আমার শুধু একটা শব্দের অর্থ নিয়ে বিভ্রান্তি হয়েছিল। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের বক্তব্য পড়ে আমার বাংলা ভাষা নিয়েই বিভ্রান্তি হয়ে গেছে।
জনাব মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, হত্যার বিচার না চাইলে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হয়ে যায়। আমি তার বাক্য দিয়েই এই সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই, হত্যাকারীদের বিচার করা না হলে হত্যাকারীরা কী করে? উত্তরটি আমরা সবাই জানি। কারণ সেটি আমরা একেবারে নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি। একেবারে রাজীব থেকে শুরু করে দীপন পর্যন্ত কোনো একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ করার দূরে থাকুক, হত্যাকারীদের ধরে কী বিচারের চেষ্টা করা হয়েছে? আমরা জানি, শুধু যে করা হয়নি তা নয় তাদেরকে বিচার করার ব্যাপারে সরকারের বিন্দুমাত্র উদ্যোগ নেই। শুধু যে উদ্যোগ নেই তা নয় যতবার ব্লগার হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা হয়েছে ততবার সরকারের লোকজন উল্টো ব্লগারদের সংযতভাবে লেখালেখি করার উপদেশ দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য যতবার পড়েছি ততবার আমার মনে হয়েছে হত্যা করে খুনীরা যতটুকু অপরাধী হয়েছে, অসংযতভাবে লেখালেখি করে ব্লগাররা তার থেকে অনেক বেশী অপরাধী হয়েছে। দোষটি হত্যাকারীর নয়-দোষটি ব্লগারদের, দোষটি লেখকদের।
আমি ঠিক জানি না এই সরকার বুঝতে পারছে কী না যে তারা খুব দ্রুত জন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এই সরকারের মাঝে একটা আত্নতুষ্টির ভাব চলে এসেছে, বিচিত্র এক ধরণের স্তাবকের জন্ম হয়েছে এবং সময়ে অসময়ে তারা নিজেরাই নিজেদের ঢাক ঢোল পিটিয়ে যাচ্ছে। উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রলীগের তাণ্ডব, দলের নেতা কর্মীদের অত্যাচার, ভয়ংকর এক ধরণের দুর্নীতি, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, একেবারে শিশু ছাত্রদের পরীক্ষায় নকল করার হাতে কলমে শিক্ষা, বেপরোয়া আচরণ, মন্ত্রীদের বেফাঁস কথা, সংবাদপত্রের উপর এক ধরণের অলিখিত সেন্সরশিপ, ৫৭ ধারা দিয়ে দেশের তরুণদের কণ্ঠরোধ এরকম ঘটনাগুলো দিয়ে খুব ধীরে ধীরে তারা সাধারণ মানুষদের মাঝে এক ধরণের ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এখন তার সাথে যোগ হয়েছে লেখক প্রকাশক হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের বিস্ময়কর এক ধরণের নির্লিপ্ততা। যুদ্ধাপরাধদের বিচারের অঙ্গীকার দিয়ে এই দেশের তরুণদের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বাংলাদেশের এই বিশাল তরুণদের উপেক্ষা করা যাবে না, তারা কিন্তু সরকারের হেফাজত তোষণনীতি দেখে মোটেও আহ্লাদিত নয়। তারা বুঝে গিয়েছে এই সরকারে ব্লগার লেখক প্রকাশক হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে মোটেও আন্তরিক নয়। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে অনেকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সরকার কোনো এক ধরণের দুবোর্ধ্য রাজনৈতিক সমীকরণ সমাধান করার জন্যে নিজেরাই এই ঘটনাগুলো ঘটিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে এই দেশের অসংখ্য মানুষ বিশেষ করে তরুণদের ভেতর এক ধরণের হতাশা এবং ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। আমি পঁচাত্তর দেখেছি তাই আমি এ হতাশা এবং ক্ষোভকে খুব ভয় পাই যারা ভয়ংকর কিছু করতে চায় তারা সাধারণের ভেতরে এই হতাশা আর ক্ষোভের জন্যে অপেক্ষা করে।
এই দেশের তরুণদের আমি অনেক গুরুত্ব দিই, আমাদের দেশের ইতিহাসে আমরা অনেকবার দেখেছি তারা এই দেশের সবচেয়ে বড় বড় সিদ্ধান্তগুলো নেয়ার জন্যে কাজ করেছে। তারা না থাকলে ভাষা আন্দোলন হত না, মুক্তিযুদ্ধ হত না স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন হত না- যুদ্ধাপরাধীর বিচারও হত না। কাজেই আমি যখন দেখি তরুণেরা ক্ষুদ্ধ এবং হতাশ তখন আমি ভয় পাই। দেশটি সম্পূর্ণ উল্টো দিকে রওনা দিয়েছিল, এই সরকার দেশটিকে সঠিক পথে এনেছে, তার জন্যে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। কিন্তু একেবারে অবহেলায় এই সরকার যদি নিজেদের অবস্থানটা সবার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে সেটি খুব দুঃখের একটা ব্যাপার হবে। সরকারকে বুঝতে হবে হেফাজতে ইসলাম বা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তার আপনজন নয়-তার আপনজন হচ্ছে এই দেশের প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক আধুনিক এবং শিক্ষিত তরুণেরা। একই সাথে আমি তরুণদের কাছে সবিনয় অনুরোধ করব আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশটি পেয়েছি সেই স্বপ্নটি যেন কেউ ভূলুন্ঠিত করতে না পারে। এই দেশ সবার সেই কথাটি যেন তারা সবার কাছে পৌছে দেয়। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারি না আমার স্বজনেরা হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমি তাদের সুস্থ হয়ে প্রিয়জনের কাছে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষা করছি।
দীপনের জন্যে আমি সেই কথাটি বলতে পারছি না, প্রিয় দীপন তুমি যে কষ্ট নিয়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেছ, এই দেশে আর কাউকে যেন সেই কষ্ট নিয়ে যেতে না হয়, সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই প্রার্থনা করি।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)