সুস্থ হতে গত জুলাইতে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তারপর থেকে শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছিল। তবুও প্রিয় জন্মভূমি, প্রিয় জনতার জন্য আশায় বুক বেঁধে ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাই পরের মাসে সংসদ থেকে ৯০ কার্যদিবসের ছুটিও নিয়েছিলেন। কিস্তু সেই ছুটি থেকে তিনি ফিরলেন, তবে প্রাণহীন দেহে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর দুইদিন পর ঢাকায় ফিরলো আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুলের মরদেহ। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় তার মরদেহ।
বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তার মরদেহ গ্রহণ করেন। সে সময় সাবেক সহকর্মীদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সেখান থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ২১ বেইলি রোডে তার সরকারি বাসভবনে।
রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদকের মরদেহ। রোববার বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
তার আগে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সৈয়দ আশরাফের প্রথম নামাজে জানাজা হবে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেয়া হবে গার্ড অব অনার।
এরপর দুপুর ১২টায় নিজের নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে আশরফুল ইসলামের মরদেহ। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে।
দুপুর ২টায় মরদেহ নেয়া হবে তার জন্মস্থান ময়মনসিংহে। সেখানে আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে তৃতীয় নামাজে জানাজা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখার অপেক্ষায় কিশোরগঞ্জবাসী।
১৯৭৫ সালে অন্য তিন জাতীয় নেতার সাথে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৯৬ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন আশরাফুল ইসলাম।
এরপর থেকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে টানা ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। অসুস্থ অবস্থায় সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন জনপ্রশাসনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এ বর্ষীয়ান নেতা।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৬৭ বছর বয়সে গত বৃহস্পতিবার রাতে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।