একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করে তিন দিনের শুনানি শেষে ২৪৩ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে।
এর ফলে এ নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২২ জন। আপিল আবেদনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে বিএনপির প্রার্থীরা। এরপরেই আছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবস্থান।
শনিবার তৃতীয় দিনে ৩১১ থেকে ৫৪৩ নম্বর আপিল আবেদনের শুনানি হয়। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ শতাধিক আবেদন বাতিল ও ৮৫ জনের আবেদন বৈধ বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইসি।
শনিবার সকাল ১০টায় নির্বাচন কমিশন ভবনের অস্থায়ী এজলাসে এ শুনানি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ আপিল শুনানি করেন। এজলাসে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর তিনদিনের শুনানিতে হাইপ্রোফাইল প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, মীর নাছির, মীর হেলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টা রুহুল আমীন হাওলাদার, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ তিনশত প্রার্থীর আবেদন না মঞ্জুর করেছে কমিশন।
অন্যদিকে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, বিএনপির প্রার্থী গোলাম গোলাম মওলা রনি, আফরোজা আব্বাসসহ দুই শতাধিক প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও ঝিনাইদহ-৪ আসনে আব্দুল মান্নানর আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এবার সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন পড়ে ৫৪৩টি। এদের মধ্যে প্রথম দিনের শুনানিতে ৮০ জন, দ্বিতীয় দিনে ৭৮ জন এবং তৃতীয় দিন অন্তত ৮৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। সবমিলিয়ে মোট ২৪৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। আর ৩০০ জনের আবেদন না মঞ্জুর হয়েছে। সব মিলিয়ে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২২জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ১৮৫ জন।
আপিলে কোন দলের কত প্রার্থী টিকলেন:
শনিবার আপিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ১৮, গণফোরাম ৪, খেলাফত মজলিস ১, জেএসডি ৩, বিকল্পধারা ৫, জেপি ২, বিএনএফ ৪, ইসলামী ফ্রন্ট ১, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১, ইসলামী ঐক্যজোট ১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৭, এনপিপি ২, জাকের পার্টি ৬, মুসলিম লীগ ৫, জাগপা ১, জাসদ ২, খেলাফত আন্দোলন ১ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ২ জন প্রার্থিাতা ফিরে পেয়েছেন।
এদিন স্বতন্ত্র ১৮ জন প্রার্থির আপিল মঞ্জুর হয়েছে।
দ্বিতীয় দিন শুক্রবার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন বিএনপির ২১ প্রার্থী, জাতীয় পার্টির ৭ জন, জাকের পার্টির ৭জন, জাসদ ৪জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ২ জন, সিপিবি ৫ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৬ জন, এনপিপির ৩ জন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ৩ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১ জন, জেএসডি’র ২ জন, এলডিপির ১ জন, বিএনএফ এর ২ জন এবং ১২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বিএনপির ৩৮ জন স্বতন্ত্র ১৩ জনসহ বিভিন্ন দল মিলিয়ে ৭৮ জনের আপিল আবেদন মঞ্জুর হয় যাদের প্রার্থিতা ফিরেছে।
৩৯টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে এবার ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা পড়ে মোট ২ হাজার ৫৬৭টি ও স্বতন্ত্র ৪৯৮টি। বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।