প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের অভিভাবকদের উদ্যোগে রাজধানীর গ্রিনরোডে ওয়াইডব্লিউসিএ গার্লস স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হয়ে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এখনই বাতিলের দাবি জানান। অভিভাবকদের মধ্যে থেকে কয়েকজন মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত অভিভাবকরা বলেন, গত ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকার প্রাথমিক সমাপনী শিক্ষা চালু করেছে। এই পরীক্ষা চালু করে শিক্ষার মান উন্নয়ন কিংবা শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ব্যাপারে আগ্রহী করে গড়ে তোলা-কোনো উদ্দেশ্যই সরকার বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
এই পরীক্ষা চালুর মধ্য দিয়ে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের ধারা আরও ত্বরান্বিত হয়েছে বলে মনে করেন বক্তারা। ভালো ফলাফলের আশায় অভিভাবকরা সন্তানকে কোচিং-প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়াচ্ছেন। নোট-গাইড বইয়ের ওপরও নির্ভরশীলতা বেড়েছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
বক্তারা আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে পঞ্চম শ্রেণির পিইসি পরীক্ষা নেয়া হবে না বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এখন বৃত্তি দেওয়ার কথা বলে এ বছর পঞ্চম শ্রেণির পিইসি পরীক্ষা নেওয়ার পাঁয়তারা করছে আমলারা। আমরা জানতে চাই, তাহলে ২০১৭ সালে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা না নিয়ে আপনারা কীভাবে বৃত্তি দেবেন?’
পিইসি পরীক্ষার শুরুর আগে যে পদ্ধতিতে উপজেলা ভিত্তিতে মেধাবীদের যাচাই করে বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হতো, সেই পদ্ধতি বহাল রেখে বৃত্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এ দাবি খুবই যৌক্তিক। এবারে অষ্টম শ্রেণি থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাহলে যে ছেলেমেয়েরা ইতোমধ্যে পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিয়ে এসেছে, তারা আবার অষ্টম শ্রেণিতে উঠে একই নামের একই পরীক্ষা কেন দেবে?
তিনি বলেন, ‘অনেকে এখানে যুক্তি দিতে পারেন, আগের আর এবারের পরীক্ষা দু’টো আলাদা শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। কিন্তু বাস্তব হলো, দু’টি পরীক্ষার সার্টিফিকেট একই নামের। একই পরীক্ষার নামের দু’টি সার্টিফিকেট তো শিক্ষার্থীদের দরকার নেই।’
এই অধ্যাপকের পরামর্শ, এক্ষেত্রে যারা ইতোমধ্যে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, আপাতত অন্তত তাদের অষ্টম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নেয়া হোক। এর পরের ব্যাচ থেকে পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। তবে সে ব্যাপারে সব দিক বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।