মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এরপরে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে যে কোনো সময় কার্যকর করা হবে তার ফাঁসি।
নিয়ম অনুযায়ী এখন এই রায়ের সংক্ষিপ্ত কপি লেখা হবে। পরে সেই কপি ট্রাইব্যুনাল হয়ে চলে যাবে কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেসময় আসামী প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা সেজন্য সময় দেওয়া হবে। তারপর রায় কার্যকর করা হবে সরকারের নির্দেশে। জেলকোড নয় বরং ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে সরকার নির্দেশ দেবে কবে ফাঁসি কার্যকর হবে।
এর আগে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের অনুলিপি প্রকাশের পর রিভিউ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ৫৩ দিনের মাথায় যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিলো।
প্রচলিত রীতি অনুসারে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর রিভিউ আবেদনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়। কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের রায়ের ৪৮ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। তবে ওই যুদ্ধাপরাধীর রিভিউ পিটিশনের সুযোগ না থাকায় পূর্ণাঙ্গ রায়ের ৭ দিনের মধ্যে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে প্রথমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের ৪৮ দিনের মাথায় ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ের ৭ দিনের মাথায় ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হয়েছিলো মিরপুরের কসাইকে। অর্থাৎ আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হওয়ার ১১০ দিনের (৫৫+৪৮+৭) মাথায় কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
কামারুজ্জামানের মামলায় ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির রায় হয় ২০১৩ সালের ৯ মে। আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হওয়ার ৪৬ দিনের মাথায় ৩ নভেম্বর, ২০১৪ মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের ১০৭ দিনের মাথায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। রিভিউ আবেদন খারিজ হলে পূর্ণাঙ্গ রায়ের ৫৩ দিনের মাথায় ১২ এপ্রিল ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। সে হিসেবে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হওয়ার ২০৬ দিনের (৪৬+১০৭+৫৩) মাথায়।
যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, সাকা, মুজাহিদ ও নিজামীর রায় কার্যকর করা হয়েছে। এখন সদ্য প্রকাশিত রায়ের পর মীর কাসেমের ফাঁসির অপেক্ষায় দিন গণনা চলছে।