পথশিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পাচারকারী সন্দেহে আটক আরিয়ান আরিফসহ ‘মজার ইসকুল’ এর ৪ স্বেচ্ছাসেবকের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। চলছে তাদের জন্য পিটিশন সইও।
যারা নিজেরাই ছিলো পথশিশুদের সেরা আশ্রয়স্থল, এখন তাদের স্থান কারাগারে। পথশিশুদের নিয়ে কাজ করাই ছিলো আরিফ, জাকিয়া, সবুজ ও শুভদের উদ্দেশ্য। পথশিশুদের এনে পড়াশোনা শেখানো বা তাদের আশ্রয় দেয়াই ছিলো এই চারজনের কাজ।
তবে এমনই এক পথশিশুর চাচা’র করা মানব ও শিশুপাচার মামলায় এখন কারাগারে এই চারজন।
আরিফ ও জাকিয়াদের আটকের পর থেকে তাদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে সারাদেশ। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে শুরু হয় আলোচনা। আরিয়ান ও জাকিয়াদের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ফেসবুকে খোলা চিঠিও লিখেন এক ফেসবুকার আশীফ এন্তাজ রবি।
হাজার হাজার বার শেয়ার হওয়ার পর সেই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ। একই পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনও।
আশীফ এন্তাজ রবি বলেন, গত শুক্রবার আমি সচিব আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে দেখা করেছি। উনি আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি দেখছেন। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো সমাধান আনার চেষ্টা করবেন।
এরপর ফেসবুকের একটি গ্রুপ তাদের মুক্তির দাবিতে অনলাইনে পিটিশনও সই করে।
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। কারো আটক থাকা বা জামিনের বিষয়টি নির্ভর করে আদালতের উপর। আটকরা নিজেরাও জামিনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত সেটি নাকচ করে দেন।
‘তাদের ভাগ্য এখন নির্ধারণ করবেন আদালত। তবে দ্রুতই তদন্ত শেষ হবে বলে আশা করছি,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রামপুরার বনশ্রীতে অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর ১০ শিশুকে ‘উদ্ধার’ করে পুলিশ। এ সময় আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চার তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, সেখানে থাকা মোবারক নামে এক শিশুর চাচা অভিযোগ করেন, তার ভাতিজাকে জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। এই অভিযোগে তিনি মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা করেন।
এর ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেফতারের পর দু’দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মোবারককে তার চাচার কাছে এবং অপর নয় শিশুকে পাঠানো হয় টঙ্গীর শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে।