মুক্তচিন্তার ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করেছে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের হাতে গড়া সংগঠনটি। অতীতের ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচারে গড়িমসির তদন্তও দাবি করেছে তারা।
সংগঠনটির মতে, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামায়াত ও জঙ্গীবাদীরা অবস্থান করছে, সেই প্রশাসন দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত দেশ ও সমাজ গঠন সম্ভব নয়। সকল মৌলবাদী সন্ত্রাসের মূল কেন্দ্র জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধকরণসহ তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান নির্মূল করার জোর দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয় ‘মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী তরুণ ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও ব্যাথিত’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়,গত দুই বছরে মৌলবাদী ঘাতকরা যেভাবে মুক্তচিন্তার লেখক ও ব্লগার রাজিব হায়দার, ড. অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু ও অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যা করেছে একইভাবে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে। মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী এসব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করছে। জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। পুলিশের দায়িত্বহীনতা ও নিলয়কে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দেয়ার তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পুলিশ তার নিরাপত্তা দিতে চায়নি। অর্থাৎ প্রশাসন তার নিরাপত্তা দিতে কেবল ব্যর্থই নয়, নিরাপত্তার বদলে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলো। প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে জবাব দিতে হবে, কেনো তারা একজন নাগরিককে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলো’।
সংগঠনটির অভিযোগ, পুলিশের এরকম আচরণের কারণে একে একে দেশের মুক্তচিন্তার ব্লগার ও লেখক কর্মীরা উগ্র মৌলবাদী জঙ্গী গোষ্ঠি দ্বারা নৃশংস ভাবে খুন হচ্ছেন। জিডি গ্রহণ না করা দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। হুমায়ুন আজাদসহ মুক্ত চিন্তার অন্যান্যদের হত্যাকাণ্ড গুলোর বিচার হলে এরকম হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হতো না বলে মনে করে তারা।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে নিলয় চট্টোপাধ্যায়ের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং সহযোগীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানানো হয়।