গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার শেষ সীমানা চাপাইল মধুমতি নদীর ওপর প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর দু-পাড়ের যাত্রীদের দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রভাবশালীদের বাধার কারণে গোপালগঞ্জ থেকে কোনো ধরনের যানবাহন সরাসরি নড়াইল যেতে পারছে না এবং ওই পাড়ের প্রভাবশালীদের বাধার কারণে নড়াইল থেকে কোনো ধরনের যানবাহন সরাসরি গোপালগঞ্জ জেলায় প্রবেশ করতে পারছে না।
এ কারণে তীব্র ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও অটো মালিক-শ্রমিকের লোকজন।
তাদের অভিযোগ, নড়াইলের গাড়ি সরাসরি গোপালগঞ্জে গেলে পুলিশ ও এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেতুর গোড়ায় বাধা দেয় এবং চাঁদা নেয়। ফলে সরাসরি কোনো গাড়ি গোপালগঞ্জ যেতে পারছে না।
অভিযোগকারীদের দাবি, গোপালগঞ্জের এই শ্রেণির লোকের বাধার কারণে নড়াইল পাড়ের এক অন্তঃস্বত্ত্বা নারী সরাসরি হাসপাতালে যেতে না পেরে ফিরে আসার পথে মারা গেছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদ করার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান তারা।
ভুক্তভোগীরা বলেন, নড়াইল-বাগেরহাট-খুলনা-যশোর-বেনাপোলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ যাতে কম সময়ের মধ্যে গোপালগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকা-খুলনা-বরিশাল-চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরাসরি সড়ক পথে যাতায়াত করতে পারে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে তিন বছর আগে এই আধুনিক সেতু নির্মাণ করা হয়।
সেতুটি নির্মাণের পর বেশ কিছুদিন ধরে গোপালগঞ্জসহ ঢাকায় এবং গোপালগঞ্জ ও ঢাকার মানুষ সরাসরি সড়ক পথে নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলা শহরে যাতায়ত করে আসছিল। হঠাৎ করে গোপালগঞ্জের পুলিশ ও নড়াইলের পুলিশ/জনতা সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ্ করে দেয়। এতে যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগ বেড়ে যায়।
অবশ্য গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, নড়াইল জেলার গাড়ি সরাসরি গোপালগঞ্জে প্রবেশ করলে যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া গাড়ি পাকিংয়ের সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় রাস্তার পাশে যেখানে-সেখানে তাদের গাড়ি রাখতে হয়। এতে দুঘটনাসহ ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ কারণেই গোপালগঞ্জের অটোরিকশা চালকদের বলা হয়েছে, তারা চাপাইল সেতুর নড়াইল পাড়ে যাত্রী নামিয়ে দেবে আর নড়াইলের গাড়ি চালকরা গোপালগঞ্জের পাড়ে যাত্রী নামিয়ে দেবে। এরপর যাত্রী অন্য গাড়ি করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবেন।
তবে সাধারণ মানুষ মনে করেন, নড়াইল জেলার গাড়ি গোপালগঞ্জে এবং গোপালগঞ্জ জেলার গাড়ি নড়াইলে প্রবেশ করতে পারলে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আমদানি-রপ্তানি বাড়বে এবং একই সঙ্গে মানুষের ভোগান্তি কমবে। এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।