বাংলাদেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থেকে যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ৬ষ্ঠ পুনর্মিলনী এবং বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০১৮ উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের সকল কর্মকাণ্ডের সাথে আমাদের সেনাবাহিনী একটা বিরাট অবদান রাখছে। পবিত্র সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশে যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই না মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ আমাদের দেশের শান্তি বিনষ্ট করুক। আমরা দেশের শান্তি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে সেনাবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কর্মদক্ষতা ও নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আজ সবার আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সেনা সদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দুর্গত মানুষের সহযোগিতা করে সশস্ত্র বাহিনী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে।
বান্দরবানের রামুতে দুর্বৃত্তরা বৌদ্ধবিহার ধ্বংস করে দেয়ার পর সেনাবাহিনী আগের চেয়েও ভালোভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বসতি নির্মাণ করে বিশ্বের সামনে সুনাম অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে মিয়ানমারের বাস্তুহারা নাগরিকরা জোরপূর্বক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আমাদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমরা অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে তাদের অবস্থানের ব্যবস্থা, ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে সার্বিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমাদের সেনাবাহিনী সেখানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিবেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিয়ন্ত্রণে এনে এখন সেখানে উন্নয়নের ব্যাপক কর্মকাণ্ড চলছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এই দুর্গম পার্বত্য এলাকায় প্রয়োজনীয় সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনী ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
ভোটার তালিকা ও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনী দক্ষতা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
ভাষণ শেষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া যারা যোগ দিতে পারেননি তাদেরকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান তিনি।