টানা ২০ দিনের সফর শেষ আজ (শনিবার) দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বরণ করে নিতে রাস্তায় নেমে এসেছে আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ।
সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফিরে আসার কথা থাকলেও; প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দিতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাস্তার দু-ধারে অবস্থান নিতে শুরু করে।
নেতাকর্মীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ এলাকা থেকে শুরু করে বনানী, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি হয়ে গণভবনের দক্ষিণ পাশের গেট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ফুটপাত পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন।
দলের কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা ছিলো সকাল ৮টার মধ্যেই যেনো নেতা-কর্মীরা রাস্তার দু’ধারে ফুল হাতে অবস্থান নেয়। তবে, রাস্তায় কেনো ধরণে অবস্থান কিংবা মিছিল করা যাবে না। কারণ এতে করে নগরীর জনসাধারণের চলাচলের ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের নেতাদের খণ্ড মিছিল করতে দেখা গেছে। এতে করে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।
গণসংবর্ধনার জন্য নির্ধারিত স্থানের আশে-পাশের এলাকাগুলো থেকে যারা আসছেন তারা তো মিছিল করে আসছেন। আবার যারা একটু দূর থেকে ট্রাক-পিকআপ কিংবা বাস যোগে এসে পৌঁছাচ্ছেন; তাদেরকেও দেখা গেছে নির্ধারীত স্থানে এসে মিছিল করছে। এতে ব্যাঘাত ঘটছে স্বাভাবিক যান চলাচলে।
নেতাকর্মীদের গণপরিবহণ থেকে সাধারণ যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে নগরীর কিছু কিছু জায়গা থেকে । রাজধানীর ফার্মগেটে গিয়ে দেখা যায় ৬ নম্বর বাস থেকে সাধারণ যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে গণসংবর্ধনায় যেতে ইচ্ছুক কতিপয় যুবক।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে ২১ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভাষণ প্রদাণ করেন। যা অধিবেশন শুরুর আগে থেকেই ছিল আলোচনায়। বিশ্বনেতাদের সকলের আগ্রহ ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কী বলবেন আর সমাধানেরই বা কী পথ দেখাবেন।
শেখ হাসিনা তার ভাষণে মিয়ানমার থেকে সেনা নিপীড়নের মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুঃখ- দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাস্তব সম্মত ৫ দফা প্রস্তাব বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
সেখানকার কর্মসূচি শেষে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ায় যান তিনি। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটানো শেষে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা হয়ে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। লন্ডন আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে আসার কথা ছিল।
কিন্তু হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করায় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে-গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় সফল অস্ত্রোপচার হয় তার।