তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন: খালেদা জিয়ার মুক্তি পুরোপুরি আইনী বিষয়। কারণ তিনি দুর্নীতি মামলায় দণ্ড পাওয়া আসামী। তাকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়নি। রাজনৈতিক কারণে কাউকে বন্দি করা হলে বা রাখা হলে তাকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করার বিষয়টি থাকে। সুতরাং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই মুক্ত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান বলেন: গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে ডেকেছিলেন, আমিও সেখানে ছিলাম। সেখানে এই বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সেখানে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন: বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন, তারা কোন পথে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান! খালেদা জিয়ার মুক্তি তো আইনের পথে ছাড়া অন্য কোনো পথে সম্ভব নয়। কিন্তু বিএনপি বারবার হুংকার দেয়, তারা আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন। বিএনপির আন্দোলনের নমুনা গত সাড়ে দশ বছর থেকে দেখে আসছি।
তিনি বলেন: খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য বিএনপি নেতাদের দৌড়-ঝাঁপ আগেও দেখেছি। গত কয়েক দিনে তাদের সংসদ সদস্যরা বেগম জিয়ার সাথে দেখা করে তাকে মুক্ত করে বিদেশে পাঠাবেন এ রকম কথা বলেছেন। কোথায় পাঠাবেন সেটা পরের বিষয়। প্রথমত: তার মুক্তির বিষয়টি সুরাহা করতে হবে। মুক্তির বিষয়টা একান্ত আইনী ব্যাপার, এখানে অন্য কিছু নেই। জামিন বা খালাস বা প্যারোল- সবক্ষেত্রেই আইনি প্রক্রিয়া আছে। আর উনি কোনো প্যারোল আবেদন করেননি।
উইকিলিকসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক জিয়ার জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ প্রকাশের বিষয়ে মন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন: যে কথাটি এতদিন আমরা বলে আসছি, সেটি উইকিলিকসে তথ্যের মাধ্যমে উঠে আসছে। এটি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। আদালতে স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে এটি প্রমাণিত যে, তারেক জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড। তার পরিচালনা এবং বেগম খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষ্যে এই গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। আমরা যখনই বলেছি, তখনই বিএনপি এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন জাগে, তারেক জিয়া এবং খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে এই ঘটনা ঘটেছে এটা উইকিলিসে উঠে এসেছে এখন বিএনপি কি বলবে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সব টিভি চ্যানেল সম্প্রচার শুরু প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন: গতকাল সব প্রাইভেট চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত হয়ে সম্প্রচারে গেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য সুখবর। এতোদিন বাংলাদেশের টাকা বিদেশি স্যাটেলাইটে যারা পরিচালনা করেন তাদের দেয়া হতো। ফরেন কারেন্সি বাংলাদেশ থেকে চলে যেতো। সেই টাকা পরিশোধ করার জন্য কিছুটা ঝামেলা ছিল। প্রতিটি চ্যানেলকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হতো। এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য ব্যয় বাংলাদেশি টাকাতেই দেয়া সম্ভব।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মান সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন: বিটিভি কয়েক মাস আগে থেকে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার করছে। কোনো ধরনের ত্রুটি আমরা পাইনি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিপূর্ণ সেবা দেয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সব আছে।
ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে টিভিগুলোর ক্রম ঠিক রাখা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন: আমরা নির্দেশনা দেয়ার পর যে ক্রমটি অ্যাটকোর পক্ষ থেকে করে দেয়া হয়েছে সেটিই আমরা ক্যাবল অপারেটরদেরকে জানিয়েছিলাম তারা সেটা অনুসরণ করছে। কোনো কোনো জায়গায় না মানা হলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নেয়া হবে। আজকে দেশ ডিজিটাল হয়েছে কিন্তু আমাদের সম্প্রচার মাধ্যম পুরোপুরি ডিজিটাল হয়নি। সম্প্রচার মাধ্যমটাকে ডিজিটাল করতে হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ক্যাবল অপারেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল হবে। পরে সমগ্র দেশে ডিজিটাল সম্প্রচার হোক এটাই আমরা চাই।