এপ্রিলে চারদিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এবারের ভারত সফরে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা কূটনৈতিক সফলতা বয়ে আনবে বলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আশেকা ইরশাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মূল আলোচনায় অনেকগুলো বিষয় থাকবে নিশ্চয়ই। এর আগেও ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলোর সমাধানও এসেছে।
‘এর আগে বর্ডার এগ্রিমেন্ট হয়েছে। সেটা বেশ সফলভাবেই হয়েছে। তবে এবারের সফরে আলোচনায় মূলত দুটি ইস্যু থাকবে। এক. তিস্তা পানি চুক্তি এবং দুই. প্রতিরক্ষা চুক্তি।’
তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তিনি বলেন: ‘এবার তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে কোন বাড়তি পদক্ষেপই হবে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় কূটনৈতিক সাফল্য। সেটা স্মারক চুক্তি সই হোক বা নীতিমালা যাই হোক।
আন্তর্জাতিক এ সম্পর্ক বিশ্লেষক বলন: এর আগে তিস্তার পানি বণ্টনের ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের নেতিবাচক ভূমিকা দেখেছি। এবার যদি তিস্তা চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণ পাওয়া যায় তাহলে সেটা বেশ বড় প্রাপ্তি হবে।
‘আর শুধু চুক্তি করাই নয়, সেসব প্রয়োগেও সচেষ্ট থাকতে হবে। এবারের সফরের তাই কূটনৈতিক সফলতা মূলতঃ নির্ভর করছে তিস্তা চুক্তির উপর।’
পাশাপাশি প্রতিরক্ষা চুক্তির ব্যাপারে এর মধ্যে তেমন কোন কথাবার্তা না হলেও একটা বড় কূটনৈতিক আলোচনার জায়গা তৈরি হবে বলে মনে করছেন অধ্যাপক আশেকা ইরশাদ।
তিনি বলেন: এই বিষয়টা খুবই সংবেদনশীল বিষয়। এই জায়গাটা নিয়ে বাংলাদেশই এখনো ঠিকভাবে ভেবে উঠেনি। তাই সবদিক চিন্তা করেই বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর আগে যেভাবে ভেবে চিন্তে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবারও তাই করতে হবে।
ভারত সফরে কূটনৈতিক সফলতা বিষয়ে একইরকম কথা বলছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরের কূটনৈতিক সফলতা নির্ভর করছে তিস্তা চুক্তির উপর। সেটাই এখন আমাদের মূল ইন্টারেস্ট।
‘পাশাপাশি আমাদের যে বাণিজ্য ঘাটতি আছে সেটা কীভাবে কমানো যায় সেটা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যে এনার্জি এবং ইলেকট্রিসিটি নিয়ে কাজ চলছে সেটাতে ভারত কতটা সহায়তা করবে সেই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনায় বসতে হবে।’
তিস্তা চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের সমর্থন বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, সেটা তারা আভ্যন্তরীণভাবে দেখবেন। আমাদের মূল উদ্দেশ্য থাকা দরকার তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা।
ধারণা করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আলোচনায় থাকবে প্রতিরক্ষা চুক্তি। ভারত এরকম চুক্তির ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। পাশাপাশি বাংলাদেশের কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রিতেও বেশ আগ্রহী রয়েছে ভারত। তবে, বাংলাদেশ এখনই এরকম কোন চুক্তিতে আগ্রহী নয়। বরং কূটনৈতিক পাড়া থেকে সমঝোতা স্মারকের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
আগামী ৭-১০ এপ্রিল ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।