যুক্তরাষ্ট্র ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথম কোনো টিকার (ভ্যাকসিন) অনুমোদন দিয়েছে।
দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত ১ মে ‘ডেংভেক্সিয়া’ নামের এই টিকার (ভ্যাকসিন) অনুমোদন দেয় বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওয়েবসাইটের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, অনুমোদিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ টিকাটি ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের ডেঙ্গুরোগ প্রতিরোধে কাজ করবে।
প্রায় ৩৫ হাজার রোগীর ওপর ডেঙ্গু প্রতিরোধ টিকাটির কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দিয়েছে ১৯টি দেশ। এছাড়া অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা নিয়ে আরও বলা হচ্ছে, যারা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে শুধু তাদের জন্যই এই ভ্যাকসিন। এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি তারা এটি গ্রহণ করতে পারবেন না। এই টিকা মূলত দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্তের প্রতিরোধের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এ কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে যেন, তারা একজন রোগীর অতীত ইতিহাস ভালো করে পর্যবেক্ষণের পর এই টিকা গ্রহণ করতে বলেন। তা না হলে এটি তেমন কোনও কাজে আসবে না। আগে কখনো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হলে এই টিকা কোনোভাবেই গ্রহণ করা যাবে না।
আবিস্কারক সংস্থাটি বলছে, ডেঙ্গুর এই টিকা তিনটি ইনজেকশনের মাধ্যমে দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম ইনজেকশনটি দেয়ার পর দ্বিতীয়টি ৬ মাস পর এবং তৃতীয়টি ১ বছর পর দিতে হয়।
এই ডেঙ্গু ভ্যাকসিনের অন্যতম উদ্ভাবক এনইউএস মেডিকেল স্কুলেরর একজন এমিরেটাস অধ্যাপক ডুয়েন গাবলার বলেছেন, বিশ্বের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা যে, সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে এই ভ্যাকসিন কার্যকর হতে পারে’।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বায়োলজিক্স ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক পিটার মার্কস বলেন, এক টাইপের ডেঙ্গুতে কেউ আক্রান্ত হলে ওই নির্দিষ্ট টাইপটির বিরুদ্ধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। কিন্তু একই রোগী যদি ওই টাইপের পর বাকি তিনটির যেকোনও একটি টাইপে আক্রান্ত হন তাহলে তার অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। এমনকি তখন তার মৃত্যুও হতে পারে। এক্ষেত্রে নতুন ভ্যাকসিনটি মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি কমাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র বলছে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ৫ লাখ রোগি মারাত্মক অবস্থায় চলে যান এবং ২০ রোগি হাজার মারা যান।