সৌদি আরবের নারীরা দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোটদানের জন্য নিবন্ধিত হচ্ছেন। রাজ্যটির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের প্রক্রিয়ায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন।
চলতি বছরের শেষে দেশটির অনুষ্ঠিতব্য পৌর নির্বাচনে নারীরা ভোটাধিকার পাবেন। অত্যন্ত সীমিত অধিকার পাওয়া সৌদি নারীরা নতুন এই অর্জনের ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারবেন।
মদিনা এবং মক্কায় রোববার নির্বাচনী অফিসের উদ্বোধন করার পর জামাল আল-সাদী এবং সাফিনাজ আবু আল-শামাত নামে দুই নারী শহর দুটিতে ভোটার হিসেবে প্রথম নিবন্ধিত হন বলে দেশটির গণমাধ্যম সৌদি গেজেট সূত্রে জানা গেছে।
ভোটারদের নিবন্ধনের কাজ ২১ দিন ধরে চলবে। প্রথম নারী হিসেবে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার সঙ্কল্প ছিলো বলে জানান শামাত। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ নারীদের জাতীয় দায়িত্ব।
নির্বাচনে নারীদের কম অংশগ্রহণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টির প্রেক্ষিতে ২০১১ সালে সৌদি রাজা আব্দুল্লাহ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণের অধিকারের ব্যাপারে আভাস দিয়েছিলেন।
অ্যাক্টিভিস্টরা এই উদ্যোগকে একধরনের অগ্রগতি হিসেব উল্লেখ করলেও নারীদের সমানাধিকার পেতে আরও অনেক দুর যেতে হবে বলে জানান।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর কারেন মিডেলটন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সৌদি আরবে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার পথে একে একটি ক্ষুদ্র অর্জন বলে মন্তব্য করেন।
সৌদি সমাজে নারীদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের এখানে গাড়ি চালানোর অধিকার নেই। ভ্রমণে, আর্থিক কাজে অথবা উচ্চ শিক্ষায়, অথবা বিবাহের ক্ষেত্রে এখনোও তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়।
ডিসেম্বরের আসন্ন নির্বাচন বিষয়ক এক কর্মশালায় নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতাকারী ২১ জন নারীর একজন হাইফা-আল-হাবাবি (৩৬) বলেন, তিনি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিতে প্রচারাভিযান চালাবেন।
তিনি বলেন, এতদিন ধরে চলে আসা ধারার পরিবর্তন করতে হবে। পরিবর্তনই জীবন। সরকার আমাদের এই সুবিধা দিয়েছেন এবং আমি এর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহারের উপর জোড় দিচ্ছি।