ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। অচেনা এক সময় আর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দক্ষিণের নতুন নগরপিতাকে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হলো। তবে সময় ও পরিস্থিতি যাইহোক না কেন, যে দায়িত্ব তিনি নিলেন- তা আন্তরিকতার সাথেই পালন করবেন বলে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের এই সদস্য।
তাপস কথা দিয়েছেন, নির্বাচনে দক্ষিণ সিটির উন্নয়নে তিনি যে ইশতেহার বা রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন; সেই অনুযায়ী আগামী ৯০ দিনের মধ্যে মৌলিক সেবাগুলো নগরবাসীর কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি করোনাভাইরাস মোকাবেলা, মশক নিধন, আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জনস্বাস্থ্য এবং যানজটমুক্ত রাস্তাঘাট- এই পাঁচটি বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের কথাও বলেছেন।
আরেকটি বিষয় অকপটে স্বীকার করেছেন ফজলে নূর তাপস; তা হলো ডিএসসিসির দুর্নীতি। বেশ দৃঢ়তার সাথেই তিনি বলেছেন, ‘আগেও বলেছি, আজও বলছি- প্রথম থেকেই দুর্নীতি রোধে কাজ করব। কেননা বিগত সময়ে দুর্নীতির কারণে নগরবাসী সুফল পাননি।’
আমরা জানি, এই দুর্নীতিই যে কোনো উন্নয়ন বা ভালো কাজে সবচেয়ে বড় বাধা। বলতে গেলে, দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এই রোগে জর্জরিত। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানপ্রধান তার প্রতিশ্রুতিতে অনড় থাকলে তা দূর করা অবশ্যই সম্ভব। যদিও এদেশের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে তা শুধু কঠিনই নয়, অসম্ভবও বটে। নিশ্চয়ই তিনি সেই অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করবেন।
দেখা গেছে অতীতেও কয়েকজন নগরপিতা তাদের দায়িত্ব নিয়ে নগরবাসীকে অনেক সুন্দর সুন্দর প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় অনেকক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছেন। বিশেষ করে দায়িত্ব নেয়ার পর তাদেরকে ঘিরে একটা বলয় তৈরি হতে দেখা গেছে। সেই বলয় সর্বক্ষণ ঘিরে রেখেছে মেয়রকে। নানান অনিয়ম-দুর্নীতে জড়িয়ে পড়েছে সেই বলয়ের একেক ব্যক্তি। দিন শেষে যায় দায় গিয়ে পড়েছে সেইসব নগরপিতার কাঁধেই।
আমরা মনে করি, সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেবেন ফজলে নূর তাপস। নগরবাসী তার ওপর আস্থা রেখেছেন, তিনিও সেই আস্থার প্রতিদান দেবেন। নতুন নগরপিতার জন্য আমাদের অভিনন্দন ও শুভ কামনা।