গত বছরও এই সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ ছিলেন হোসে মরিনহো। তার ঠিক দুই সপ্তাহ পর পর্তুগিজ ভদ্রলোককে প্রায় একবছরের জন্য বেকার বানিয়ে ঘরের ছেলে ওলে গানার সলশেয়ারকে নিয়োগ দেয় রেড ডেভিলরা। সেই মরিনহো আবারও ফিরছেন ওল্ড ট্রাফোর্ডে, টটেনহ্যাম হটস্পারের কোচ হয়ে। থাকছে প্রতিশোধ নেয়ার মধুর এক সুযোগ! বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১.৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে প্রিমিয়ার লিগের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী।
ম্যানইউ’র কর্তা কিংবা ভক্তদের সঙ্গে খুব একটা সমস্যা ছিল না মরিনহোর। সমস্যার কেন্দ্রে ছিলেন পল পগবা। ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতানো এ ফুটবলারকে কেনো ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, ম্যানইউ থাকাকালীন সময়ে প্রায় প্রতিটা মুহূর্তে এমন প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়েছে ‘স্পেশাল ওয়ান’কে। খবর হয়েছিল মরিনহোর বিপক্ষে ড্রেসিংরুমে বিদ্রোহই শুরু করেছিলেন ফরাসি মিডফিল্ডার।
একদিকে মরিনহোর কপালও খারাপ ছিল বলা চলে! তার অধীনে বেশিরভাগ সময়ে চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন পগবা। যখনই ফিরেছেন মাঠে হয় কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয়তো অফ-ফর্মের কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। যেতে চেয়েছেন রিয়ালেও। শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি।
পগবার বিকল্পের খোঁজে একাধিক মিডফিল্ডারের পেছনে ছুটলেও মরিনহোকে খেলোয়াড় কেনার অর্থ দিতে চাননি ম্যানইউর কর্তারা। একই সমস্যায় ভুগছেন সলশেয়ারও। মরিনহো ছাঁটাই হওয়ার একদিন পরেই নিয়োগ পাওয়া এ কোচ শুরুতে ভালোই চালাচ্ছিলেন ম্যানচেস্টারকে। ধারণা করা হচ্ছিল অ্যালেক্স ফার্গুসন যুগ বুঝি ফিরে এলো।
কিন্তু চাকরি পাকা হতেই পথ হারিয়েছেন সলশেয়ার। রাস্তা হারিয়েছে ম্যানইউও। চলতি মৌসুমে এতটাই খারাপ অবস্থা দলের যে- শেফিল্ড শিল্ড, উলভারহ্যাম্পটনের মতো দলের পেছনে থেকে পয়েন্ট টেবিলের দশে অবস্থান প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চবার শিরোপাধারীদের। ম্যানচেস্টারের বাতাসে ফিসফাস, টটেনহ্যামের কাছে বুধবার হারলেই চাকরি হারাবেন এককালে ফার্গুসনের প্রিয় ছাত্র সলশেয়ার।
উল্টো অবস্থানে মরিনহো। টটেনহ্যামের ইতিহাসে অন্যতম সফল কোচ মউরিসিও পচেত্তনির আমলে পথ হারানো দলটাকে আট থেকে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠিয়ে এনেছিলেন, বর্তমানে আছে ছয়ে। বুধবার জিততে পারলে পাঁচে উঠে আসবে স্পাররা।
ম্যানইউর রক্ষণ আর সলশেয়ারের চাকরি ধসিয়ে দিতে এক ঝাঁক ফর্মে থাকা খেলোয়াড়কে পাচ্ছেন মরিনহো। ম্যানইউর বর্তমান দলকে তো হাতে তালুর মতোই চেনা তার। ডেলে আলিকে ব্যবহার করে রেড ডেভিলদের মাঝমাঠ আর রক্ষণ ধসিয়ে দিতে পারবেন। ডেলের পেছনে থাকবেন এরিক ডায়ার। আছেন মুসা সিসিকো, ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, হ্যারি উইংসের মতো খেলোয়াড়রা। যাদের ব্যবহার করে যার কাছে চাকরি হারিয়েছিলেন, তার চাকরি কেড়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে খুব একটা খারাপ লাগবে না নিশ্চয়ই সাবেক চেলসি, ইন্টার মিলান আর রিয়াল মাদ্রিদ কোচের!