ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ৫ দিনের সফরে ঘুরে গেলেন বাংলাদেশ। সফরে তিনি আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে অংশগ্রহণসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এছাড়া তিনি ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে এক প্রীতিভোজে অংশ নেন যেখানে দেশের বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্টজনরা ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রণব মুর্খাজির ছবি সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। একটি ছবিতে দেখা গেছে, প্রণব মুখার্জি একটি চেয়ারে বসে আছেন আর তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীসহ ভারতীয় হাইকমিশনার। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক ও টুইটার পেজে ওই ছবিসহ মোট ১৭টি ছবি পোস্ট করেছিল। এ থেকেই আলোচনা-সমালোচনার জন্ম। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, প্রণব মুখার্জি এভাবে সবাইকে দাঁড় করিয়ে রেখে বসতে পারেন কিনা, তার প্রটোকল কী ছিল এবং দেশের মন্ত্রী-রাজনীতিবিদদের ওভাবে দাঁড় করিয়ে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। বিষয়টি মোটা দাগে আমাদের নজরে এসেছে।ভারতীয় হাইকমিশনের পোস্ট করা বাকি ১৬টি ছবি দেখলে বিষয়টির প্রেক্ষাপট সর্ম্পকে একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়। প্রীতিভোজ শেষে বিএনপি মহাসচিবসহ আরো রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন গণমাধ্যম সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ওই আয়োজনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়া সদস্যদের সঙ্গে ফটোশেসনে অংশ নিয়েছেন উপ-মহাদেশের প্রবীণ ওই রাজনীতিবদ। অনুষ্ঠানের আগত অতিথিদের বিভিন্ন গ্রুপ একেক করে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে ছবি তুলেছেন, আর দীর্ঘসময় তাদের সঙ্গে ছবি তোলার কারণে তার বসার ব্যবস্থা করেছিল আয়োজকরা। বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বিভিন্ন সময় বিদেশে গেলে সেখানকার রাজনীতিবিদ বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বিভিন্ন অবস্থার চিত্র আমরা দেখতে পাই। যেকোনো অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানের ধরণ, অনুষ্ঠানের মধ্যমণি, আগত অতিথিদের গুরুত্ব বুঝে আয়োজক আলাদা আলাদা ধারা ও রীতি মেনে চলে থাকে। সেসব কারণে অনেকসময় প্রটোকল ভঙ্গ হয়েছে বা কারো কারো সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে হতে পারে। সে বিবেচনায় প্রণব মুখার্জির চেয়ারের বসার ওই প্রেক্ষাপট খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং বিষয়টি নিয়ে অহেতুক আলোচনা একটি মানসিক অস্থিরতার প্রকাশ বলে আমাদের মনে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবার অবকাশ আছে, তাই নয় কি? যদিও ভারতীয় হাইকমিশন পরে সবগুলো ছবি ফেসবুক ও টুইটার পেজ থেকে সরিয়ে নিয়েছে।