সাংবাদিক বজলুর রহমানের আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধারণ করবে। সমাজে বড় পরিবর্তন আনতে নির্ভীক ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ বজলুর রহমানের আদর্শ উজ্জ্বল পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন বক্তরা।
রোববার জাতীয় জাদুঘরে ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক -২০১৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তরা।
দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বজলুর রহমান বাংলাদেশে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃত ছিলেন। ষাটের দশকে সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া বজলুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘মুক্তিযুদ্ধ’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে জনমত সৃষ্টি করেছেন, স্বাধীনতার পর সাংবাদিকতাকে অবলম্বন করে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন গুণী এই সাংবাদিক।
২০০৮ সালে বজলুর রহমানের মৃত্যুর পর তার পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য বজলুর রহমান স্মৃতি পদক প্রবর্তন করে । এরই ধারাবাহিকতায় এবারও শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে স্মৃতিপদক প্রদানের আয়োজন।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডাক্তার সারওয়ার আলী বলেন, আমরা মনে করি বজলুরে রহমান স্মৃতি পদক প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের যে অজানা ইতিহাস, যে মানবিক ইতিহাস, যে মানবিক বিপর্যয়ের যে ইতিহাস সেই ইতিহাসটি উঠে আসবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘বজলুর রহমান সৎ ও বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
আজকের প্রজন্মের সাংবাদিকদের বজলুর রহমানের লেখনি ও সাংবাদিকতা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বজলুর রহমান বিশ্বাস করতেন সাংবাদিকতার উচ্চতম আইন হচ্ছে সত্য কথা বলা, আর তিনি সারাজীবন তা করে গেছেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, বজলুর রহমান দেখিয়ে গেছেন, সততা এবং দায়িত্বশীলতার সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে কিভাবে সাংবাদিকতা করা যায়।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বস্তুনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতায় গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন তিনি। আমৃত্যু গণতন্ত্র ও মুক্তিযদ্ধের চেতনা ভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজ অবস্থান থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কাজের মধ্য দিয়েই তিনি স্মরণীয় ও অনুকরণীয় এক আদর্শ হয়ে থাকবেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত লেখনীর মাধ্যমে তার আদর্শের আলোকবর্তিকা থাকবে।
অনুষ্ঠানে বজলুর রহমানের স্ত্রী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড চ্যানেল আই”র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর ও বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
এবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে গাজীপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক গণমুখের স্টাফ রিপোর্টার ইজাজ আহমেদ মিলন এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের প্রতিবেদক মৌমিতা জান্নাতকে বজলুর রহমান স্মৃতি পদক দেওয়া হয়েছে।