পরীক্ষা, ডেডলাইন আর কাজের প্রচণ্ড চাপ। সব মিলিয়ে একজন নার্ভাস মানুষে পরিণত হচ্ছেন আপনি। প্রতিনিয়ত বাড়ছে বুকের ধুকপুকানি আর হাতের তালু ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা। এসব থেকে রেহাই পেতে দরকার নিজেকে ঠাণ্ডা রাখা।
চাপের মধ্যে কখনও কখনও আপনার কণ্ঠস্বর বদলে যায় আর কখনও কখনও মস্তিস্ক ফাঁকা হয়ে যায় পুরোপুরি। তবে নিউরোসায়েন্স গবেষকরা তিনটি উপায় বাতলাচ্ছেন যেগুলো প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও মাথা ঠাণ্ডা রাখতে ঝটপট কাজে আসবে।
নিশ্চয়ই এই সমস্যা সমাধানে আরো কিছু উপায় আছে। কিন্তু এই তিনটি উপায় আপনাকে খুব দ্রুত ঠাণ্ডা হতে সাহায্য করবে।
প্রথমত শ্বাস নেওয়া
গভীরভাবে শ্বাস নিন। তারপর ধীরে ধীরে নাকের মাধ্যমে শ্বাস ছাড়ুন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পাঁচ গুনুন। কয়েকবার একইভাবে করতে থাকুন। দেখবেন শান্ত হতে পারবেন। যুগ যুগ ধরে যোগী ও বৌদ্ধরা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আসছেন। নিজের স্নায়ুতন্ত্রের উপর এভাবেই তারা নিয়ন্ত্রণ আনছেন। আর গবেষকরা বলছেন মস্তিস্কের উপরে নিউরনের কার্যক্রমের বেশ প্রভাব রয়েছে। চাপের মধ্যে আমরা খুব দ্রুত শ্বাস নেই কারণ তখন আমরা সমূহ বিপদের জন্য তৈরি হয়ে পড়ি। যদি আপনাকে দৌড়ে পালাতে হয় তখন সেটা দরকারি কিন্তু সবার সামনে কথা বলার সময় নিশ্চয়ই সেটা দরকার নেই। সুসংবাদ হচ্ছে, গভীরভাবে ও ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়ার ফলে আপনি আপনার মস্তিস্ক যে বার্তা পাচ্ছে সেটা আপনি বদলে দিতে পারবেন। মানে ‘বিপদ’ থেকে ‘সবই ঠিক আছে’। পরের বার নিশ্চয়ই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখবেন। মজার ব্যাপার হলো, সেটা সামনের জন টেরও পাবে না।
গুনগুন করা
শ্বাস নেওয়া শেষ? এবার গুনগুন করুন। হতে পারে সেটা আপনার পছন্দের কোনো টোন, কোনো গানের লাইন অথবা যা কিছু আপনার ইচ্ছা। গবেষণায় দেখা যায়, গুনগুন হার্ট রেটকে প্রভাবিত করতে পারে। এমনকি কখনো শোনা যায়নি সেসব গানও। কারণ সেসব মস্তিস্ক থেকেই আসে। ২০১৩ সালের এক গবেষণা বলছে, গুনগুন করলে, গান গাইলে বা মন্ত্র বললে হার্ট ছন্দবদ্ধভাবে কম্পিত হয়। তাই পরেরবার হৃদপিণ্ড দৌড়াচ্ছে মনে হলে গান গান বা কোনো সুর গুনগুন করুন।
ফোকাস করুন
অনেকগুলো কাজ একহাতে সামলাতে গিয়ে আপনি প্রবল ব্যস্ত। শান্ত থাকতে চাইছেন বা কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাইছেন কিন্তু কোনোভাবেই পারছেন না। গবেষণা বলছে আপনি এক সময়ে শুধুমাত্র একটি কাজ করতে পারেন। যখন আপনি একসঙ্গে দুটি কাজ করতে চান তখন মস্তিস্ককে দুই দিকে ধাবিত হতে হয়। ফলে খুব দ্রুতই আপনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। আর শরীরে স্ট্রেস হরমোনের বন্যা হয়ে যায়। কিন্তু একটা একটা করে কাজ করলে আপনি দ্রুত কাজ শেষ করতে পারবেন এবং তারপর শান্ত হয়ে যেতে পারবেন। তাই কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। আগে কোনটা করা দরকার সেটা করুন। বাকিগুলোর কথা ভুলে যান এই কাজটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এভাবেই অ্যাথলেট ও খেলোয়াড়দের ফোকাস করতে বলেন তাদের কোচরা। একসময়ে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে একটি কাজ করাই সবথেকে ভালো অভ্যাস। তাহলে দেখবেন কাজ শেষে দ্রুতই শান্ত হতে পারছেন।