একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
শনিবার সকাল ৯টা দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র ছোটসন্তান মুর্তজা বশীরের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৭ অগাস্ট। ১৯৪৯ সালে ঢাকা গভর্নমেন্ট ইনষ্টিটিউট অব আর্টস (বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট)-এ দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি চারুকলা শিক্ষা শুরু করেন। ১৯৫৪ সালে পাঁচ বছর মেয়াদী শিল্প শিক্ষা শেষ করে প্রথম বিভাগে পাস করেন মুর্তজা বশীর।
আর্ট স্কুল থেকে পাস করার পর ১৯৫৫ সালে বছর খানেক নবাবপুর সরকারি স্কুলে ড্রয়িং শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। এরপর ১৯৫৬ সালে তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য ইতালির ফ্লোরেন্সে যান।
ইতালিতে দু’বছর কাটিয়ে ১৯৫৮ সালের শেষদিকে তিনি লন্ডন হয়ে দেশে ফেরেন। ফ্লোরেন্স ছেড়ে আসার আগে মুর্তজা বশীরের প্রথম একক প্রদর্শনী হয় ২৯ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল ‘লা পার্মানেন্ট’ গ্যালারীতে। ফ্লোরেন্সে অবস্থানকালীন আঁকা চৌদ্দটি তৈলচিত্র এতে ছিল।
১৯৭৩ সালের আগস্টে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। চট্টগ্রামে তিনি ১৯৭৬ সালের মার্চের মধ্যে ‘এপিটাফ’ সিরিজে আরো ২০টি ছবি আকেন তিনি। ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক হিসাবে অবসর নেন।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে, প্রতিবাদে মুর্তজা বশীর ছিলেন অগ্রভাগে।
রাষ্ট্রপতির শোক
মুর্তজা বশীরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মুর্তজা বশীরের মৃত্যু দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার সৃষ্টি ও কর্ম তরুণ প্রজন্মের জন্য চিরকাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
রাষ্ট্রপতি মরহুম মুর্তজা বশিরের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
মুর্তজা বশীরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, দেশের চিত্রকলার বিকাশে মুর্তজা বশীর যে অনন্য অবদান রেখেছেন তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্ররেণা যুগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।