‘একটি জাতির শিক্ষা নিয়ে হেলা-ফেলা করা চলে না। সব উন্নয়নের মূলে রয়েছে শিক্ষা। পৃথিবীর যা কিছু শ্রেষ্ঠ, যা কিছু মহান তা শিক্ষা থেকেই এসেছে।’, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি)-এর পঞ্চম সমাবর্তনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এ কথা বলেন।
বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সমাবর্তন বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরো বলেন, ‘আমরা এখন একটি অস্থির সময়ে প্রবেশ করেছি। এই সময়ে আমাদের সবার মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হয়েছে। আমাদের যেমন সামনে এগিয়ে যেতে হবে, তেমনি থামতেও শিখতে হবে। ঠিক সময়ে থামতে শিখলে তোমরা বৃক্ষের মতো ফুল-পাতায় শোভিত হয়ে উঠবে, দেশের ও জাতির কাজে লাগবে।’
এ সমাবর্তনে স্প্রিং-২০১৬ থেকে ফল-২০১৭ পর্যন্ত সেমিস্টারের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উত্তীর্ণ ২৪৪৬ শিক্ষার্থী তাদের ডিগ্রি অর্জন করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি)-এর মাননীয় আচার্য মোঃ আবদুল হামিদ কর্তৃক মনোনীত হয়ে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। সমাবর্তন বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
সমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাঈদ সালাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডা. এ এম শামীম। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এসইউবির রেজিস্টার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মির্জা এজাজুর রহমান (অব.)।
এসইউবির ৫ম সমাবর্তনে ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে চ্যান্সেলর’স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ২ শিক্ষার্থী । ভাইস-চ্যান্সেলর’স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ২১ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ডিন’স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ৪৪ শিক্ষার্থী।
সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে। ব্যবসার মনোভাব ত্যাগ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞানচর্চা ও সেবার মনোভাব তৈরি করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন এসেছে। নারী শিক্ষায় আমাদের অর্জন সার্কভুক্ত অন্য দেশগুলোর চেয়ে বেশি।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা বহুদিনের শ্রম ও নিষ্ঠার স্বীকৃতি আজ পেয়েছেন। আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আপনারাই দেশের ভবিষ্যৎ; আপনারা দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। আপনাদের সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, শুধু আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত নয়, নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের বলীয়ান করে গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা হবে দেশ ও জাতির আলোকবর্তিকা; তোমরা সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত দেশ গড়ে তুলবে। তোমাদের জীবন সার্থক হোক।
সমাবর্তনে ডা. এ এম শামীম বলেন, আমরা কখনোই নিজেদের কেবল শিক্ষার্থী তৈরির কারখানা মনে করিনি, বরং দেশকে সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক উপহার দেয়ার চেষ্টা করেছি। স্বল্প খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা সবার জন্যে নিশ্চিত করছি আমরা।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডিগ্রি প্রদান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে ব্যান্ডদল চিরকুট।