‘এক সময় মঞ্চ নাটক করতাম, টেলিভিশনেও নাটক করেছি, সিনেমাতেও একটু ঘোরাফেরা করেছি। প্রথমে কয়েকটা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলাম। এরপর পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিতে এসে একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো। সেটি হলো সেই ছবিতে আমার নায়িকা ছিলেন চম্পা। তার সাথে আমার নাচের দৃশ্য ছিলো। এমনিতেইতো চম্পার তুলনায় আমি ছোট খাটো মানুষ। কিন্তু ওই নাচের দৃশ্যে চম্পা আমাকে যে ঝাকানি দিলেন, এরপর থেকে আমি পণ করেছি যে ছবিতে নাচ থাকবে সেই ছবি আমার দ্বারা করা সম্ভব না।’
-সিনেমা নিয়ে নিজের এমন মজার অভিজ্ঞতা নিয়ে এভাবেই বলছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।
সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে ‘গাঙচিল’ নামের একটি সিনেমা। বানভাসি মানুষের জীবন নিয়ে এ ছবির গল্প। এই ছবিরত মহরত অনুষ্ঠান হয় বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সহ চলচ্চিত্রটির সঙ্গে জড়িত নির্মাতা, অভিনেতা ও অন্যান্য কলাকুশলীরা। আর সেখানেই সিনেমা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন আসাদুজ্জামান নূর।
ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস ‘গাঙচিল’ অবলম্বনে নির্মিতব্য সিনেমাটির মহরত অনুষ্ঠানে ছবিটির জন্য নির্মাতা নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলকে শুভ কামনা জানান সংস্কৃতিমন্ত্রী। সেই সাথে ওবায়দুল কাদেরকেও ছবিটির জন্য শুভ কামনা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদেরের লেখা উপন্যাস থেকে সিনেমাটি নির্মাণ হলে সেখানে দেশের মানুষের কথা, বাংলাদেশের মানুষের জীবনের প্রতিফলন থাকবে বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে যে সিনেমাটি তৈরি হতে যাচ্ছে আমি বিশ্বাস করি এই সিনেমায় বাংলাদেশের মানুষের জীবন বাস্তবতা উঠে আসবে। মানুষের সংগ্রামের কথা উঠে আসবে। কারণ তিনি নিজেও সংগ্রাম করে আজকের এই অবস্থানে উঠে এসেছেন।
বাংলা সিনেমার ক্রান্তিকাল থেকে উদ্ধার পেতে হলে ভালো সিনেমা নির্মাণের আগে সিনেমা দেখার সুন্দর পরিবেশ গড়ে দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলা সিনেমার প্রাণ হলো আমাদের দেশের মা-বোনেরা। আগে সিনেমা হলে এসে তারা সিনেমা দেখতেন, সিনেমা শেষে চোখের জল মুছতে মুছতে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু এখনকার সিনেমা হলগুলো নারী বান্ধব নয়। ভালো সিনেমা তৈরির আগে ভালো সিনেমা হল তাই জরুরী।
শপিংমলে সিনেমা হল নির্মাণ বাধ্যতামূলক করতে ওবায়দুল কাদেরের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ঢাকায় আগে প্রচুর সিনেমা হল ছিলো। গুলিস্তানে বেশকিছু সিনেমা হল ছিলো যেখানে আমরা পৃথিবীর মহত্তম সিনেমা গুলো দেখেছি। বিশেষ করে নাজ নামের সিনেমা হলটি। কিন্তু এখন ঢাকা শহরে সেইসব সিনেমা হল নেই। তার বদলে সেখানে শপিংমল গড়ে উঠেছে। শপিংমল হতেই পারে, কিন্তু তারমধ্যেতো সিনেমা হলটাও থাকতে পারে।
এরপর ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, মহরত অনুষ্ঠানে সরকারের নীতি নির্ধারকদের একজন ওবায়দুল কাদের আছেন, তার কাছে আমার অনুরোধ। যেখানেই শপিংমল হবে, সেখানেই যেন সিপ্লেক্সেরও ব্যবস্থা করা হয়। কারণ সিনেপ্লেক্স হলে ভালো পরিবেশ তৈরি হলে সেখানে মানুষ সিনেমা দেখতে যায়, এটা প্রমাণিত।
ছবি: জাকির সবুজ