পুলিশের হুমকির মুখেও নিজের নির্ভীক অবস্থান বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক ছোট্ট সাংবাদিক। ছোট্ট শহর আরিজোনার ১২ বছর বয়সী ওই রিপোর্টার গল্পের পেছনে ছুটছিলো। তবে সে জানতোই না কোন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে সে।
হিলডে লিসিয়াক, টিনএজেরও কম বয়সী এই সাংবাদিকের কীর্তিকলাপ এরই মধ্যে স্কলাসটিক বুক সিরিজকে প্রভাবিত করেছে এবং সামনেই আসছে তার গল্পে প্রভাবিত একটি টিভি শোও। এর আগে লিসিয়াক ২০১৬ সালেও খবরের শিরোনাম হয়েছিলো তার নিজের শহরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট করতে গিয়ে।
তবে সেবার বেশ সমালোচনার মুখেও পড়েছিলো সে। অনেকেই বলেছিলো ৯ বছর বয়সী একজনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশেপাশে থাকা উচিত না। তবুও দমে যায়নি সে। এরপর বেশ কিছু ব্যাংক ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগ এবং আরো চাঞ্চল্যকর অপরাধের খবর সামনে নিয়ে আসে লিসিয়াক। পেনসিলভানিয়ার সেলিনসগ্রোভে তার বাবা-মায়ের বাড়ি থেকে প্রকাশিত পত্রিকা অরেঞ্জ নিউজ স্ট্রিটে এসব খবর তুলে ধরে সে।
গত সপ্তাহেও এক মাদক ব্যবসায়ী এবং যৌনতায় বাধ্য করার নারীর মধ্যকার ট্রেক্সট ম্যাসেজ তুলে ধরে রিপোর্ট করেছিলো সে।
এতকিছু করা মেয়েটিকে যখন আরিজোনার পাতাগোনিয়ায় শহরের জোসেফ প্যাটারসন নামের এক পুলিশ কর্তকর্তা জুভেনাইল জেলে পাঠানোর হুমকি দেন; তাতে দমে না গিয়ে সে অন্যায়কে তুলে ধরে।
এ সময় প্যাটারসন মিথ্যে তথ্য দিয়ে বলেন, তার গতিবিধি ভিডিও করা এবং সেটা ইন্টারনেটে প্রকাশ করা অন্যায়।
এসব হুমকির পরও সেই ভিডিও ইউটিউব এবং অরেঞ্জ স্ট্রিট নিউজে প্রকাশ করে লিসিয়াক।
লিসিয়াকের বাবাও একজন সাংবাদিক। কেন সে দক্ষিণ আরিজোনার একেবারে ভেতরের দিকে গেছিলো তা জানা যায়নি। তবে কখনোই সংবাদ সঙ্কটে ভোগেনি সে। গত সপ্তাহে সে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত সীমান্ত দেয়াল নিয়ে কার কি ভাবনা বিষয়ে।
অরেঞ্জ স্ট্রিট নিউজে লিসিয়াক লিখেছেন, সেদিন দুপুর দেড়টার দিকে সংবাদের জন্য তথ্য যাচাই-বাছাই করছিলো। সেখানেই আসেন প্যাটারসন বলেন, শহরটিতে তিনি পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। লিসিয়াককে সে থামায় এবং পরিচয় জানতে চান। ১২ বছর বয়সী সাংবাদিক তাকে নাম, ফোন নম্বর দেয় এবং বলে সে গণমাধ্যমের সদস্য।
সে সময় প্যাটারসন তাকে বলেন, আমি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কোনো বাক্য শুনতে চাই না। তাকে গ্রেপ্তার করে জুভেনাইল কারাগারে পাঠিয়ে দেবেন।
কিন্তু তারপরও লিসিয়াক প্যাটারসনের পেছনে পেছনে গিয়ে ভিডিও করতে থাকে। তার উদ্দেশে বলে, আপনি আমাকে জেলে পাঠাতে চেয়েছেন। আসলে আমি অবৈধ কী করেছি?
এরপরও প্যাটারসন তাকে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। নির্দেশ না মানার পাশাপাশি মিথ্যা বলারও অভিযোগ তোলে লিসিয়াকের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পরের দিন ইন্টারনেটে এই ভিডিও আপলোড করে লিসিয়াক। তারপরই অনেকের কমেন্ট আসতে শুরু করে। অনেকেই তাকে হিরো হিসেবে আখ্যা দেন। কেউ কেউ মনে করেন, লিসিয়াকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা উচিৎ।