শুধু নারীরাই নয়, এবার পুরুষেরাও জন্মনিরোধ করতে পারবেন সহজ এক পদ্ধতিতে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এমন একটি ইনজেকশন আবিষ্কার করেছেন; যা দিয়ে পুরুষের শুক্রাণু দীর্ঘমেয়াদে ধ্বংস করা যাবে।
একটা সময় ছিল যখন নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মনিয়ন্ত্রণের দায় ছিল শুধুই নারীর ওপর। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী হিসেবে কনডম আর জন্মনিরোধক বড়ি আসার পর সেই দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা বদলায়। বেশ পরিচিত হয়ে উঠে ভ্যাসেকটমিও। তাতে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তনও ঘটে।
এই অবস্থায় নতুন এক ইনজেকশনের খোঁজ দিলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) গবেষকরা।
তারা বলছেন, ইনজেকশনটি শিগগিরই বাজারে ছাড়া হবে। অপেক্ষা শুধু ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) অনুমোদনের।
আইসিএমআর-এর গবেষক আর এস শর্মা বলেন, ‘শিগগিরই ইনজেকশনটি বাজারে আসবে। ইতোমধ্যে তিন ধাপে এর নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।’ এছাড়া তিনবার পরীক্ষামূলকভাবে ইনজেশকটি ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে তারা সন্তুষ্ট।
‘‘মোট ৩০৩ জন পুরুষের উপর এই ইনজেকশন প্রয়োগ করে দেখা গেছে ৯৭ দশমিক ৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই ফলাফল আমাদের অনুকূলে এসেছে। বাজারজাত করা হলে এটিই হবে পুরুষদের জন্য তৈরি বিশ্বের প্রথম কন্ট্রাসেপটিভ ইনজেকশন।’’
ভারতসহ গোটা বিশ্বে এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক ওয়েবসাইটে সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দাবি করা হচ্ছে, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র এমন ইনজেকশন তৈরি করলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে তা বাজারজাতকরণ সম্ভব হয়নি।
অধ্যাপক আর এস শর্মা বলেন, ‘১৯৭০ সালে আইআইটির অধ্যাপক এস কে গুহ একটি পলিমারের সন্ধান দেন। সেটি নিয়ে ১৯৮৪ সাল থেকে গবেষণা করছি আমরা। কয়েকবার পরীক্ষ-নিরিক্ষসহ ইঁদুর ও মানুষের ওপর প্রয়োগ করে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিয়েই আমরা এতদিন ধরে গবেষণা চালিয়েছি।’
ভারত সরকারের সাবেক পরিবারকল্যাণ সচিব এ আর নন্দ বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিষয়গুলো নিয়ে আরও বেশি প্রচার চালানো উচিত সরকারের। কোনো সমস্যা ছাড়াই পুরুষরাও যে গর্ভনিরোধনে এগিয়ে আসতে পারেন এমন প্রচার এখন প্রয়োজন। তাহলেই এই ইনজেকশনের গুরুত্ব বুঝবে মানুষ।’