পুনেতে ভারত-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে পিচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমেছে আইসিসির দুর্নীতি দমন এবং নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু)। বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরতে ইউনিটের সদস্যদের সহযোগিতার জন্য বীর সিং নামের একজন কর্মকর্তাকে তদন্তে যুক্ত করেছে আইসিসি, যিনি আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছিলেন।
ইন্ডিয়া টুডে টিভির এক ছদ্মবেশী সাংবাদিক পুনের পিচ কিউরেটর পাণ্ডুরং সালগাওরকে পিচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিলে তাতে সাড়া দিয়ে ফেঁসে যান সালগাওকার। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, পুনের পিচ কিউরেটর ও প্রধান মাঠ পরিচর্যাকারীর পদ থেকে অব্যাহতি দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
পিচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে সালগাওর দ্বিতীয় পিচ কিউরেটর যিনি এমন কাণ্ডে অব্যাহতি পেলেন। এর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে গলের পিচ সংক্রান্ত বিতর্কে শ্রীলঙ্কান কিউরেটর জয়ানন্দা ভারনাভিরাকে বরখাস্ত করেছিল লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড।
তদন্তের কাজে দুবাই থেকে উড়ে আসা সহকর্মীদের শুরুতে নিজের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাবেন আকসুর কর্মকর্তা বীর সিং। ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজের সময় দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা হিসেবে দল দুটির সঙ্গে ভ্রমণ করছিলেন তিনি। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবেন এই কর্মকর্তারা। তাতে হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ থাকবে না বিসিসিআইয়ের দুর্নীতি দমন ইউনিটেরও। তদন্তের জন্য ইন্ডিয়া টুডের দুই সাংবাদিকের সঙ্গেও কথা বলবেন আকসুর কর্মকর্তারা।
ইন্ডিয়া টুডে টিভির সেই তদন্তের ভিডিওতে দেখা যায়, পুনেতে ম্যাচের আগে দুই দিন (২৩ এবং ২৪ অক্টোবর) দুই ছদ্মবেশী সাংবাদিককে পিচ দেখানোর সুযোগ দিয়েছিলেন সালগাওকার। উইকেটে রান হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে রানের ফোয়ারা বইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন ওই কিউরেটর, ‘রান হবে। এটা খুবই ভাল উইকেট। ৩৩৭ রানের মত হতে পারে। আবার ৩৩৭ রান তাড়া করাও যাবে।’
সালগাওকার নিজ ক্ষমতাবলে ওই সাংবাদিকদের উইকেটের কাছে নিয়ে যান। বিসিসিআইয়ের নিয়মানুযায়ী, বোর্ডের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া পিচের কাছাকাছি অন্যকারো যাওয়া নিষেধ। নিষেধের তালিকায় সাংবাদিকরাও আছেন।
সাংবাদিকদের ধারণ করা সেই গোপন ভিডিওতে দেখা গেছে, বিসিসিআইয়ের গ্রাউন্ডস এবং পিচ কমিটির সদস্য মহেশ মোহমুঙ্কারকেও। নিয়ম অনুযায়ী তার থাকার কথা ছিল না মাঠে। তাই তদন্তের আওতায় আসতে যাচ্ছেন মহেশও।
পরে ম্যাচে দেখা গেছে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৩০ রান করতে পেরেছিল নিউজিল্যান্ড। আর চার ওভার হাতে রেখেই রান তাড়া ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
পুনের ওই মাঠের পিচ নিয়ে আইসিসির অভিযোগ অনেকদিনের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারত এখানে ৩৩৩ রানে হেরে যায়। ওই ম্যাচটি তিনদিনে শেষ হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের পর পিচকে নিকৃষ্ট মানের বলেছিল আইসিসি।
পুনের কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা নিয়ে রোববার তৃতীয় ওয়ানডের ভেন্যু কানপুরের গ্রীনপার্ক স্টেডিয়ামকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে বিসিসিআই। সমস্ত প্রবেশ পথে রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। মাঠে প্রবেশের সুযোগ থাকছে কেবল উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা এবং মাঠ কর্মীদের।