মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণ পুনঃতফসিলের (রিশিডিউলিং) সুবিধা নিয়ে ১৩ হাজার ৩০৭ ঋণ খেলাপি তাদের ১৯ হাজার ৬০৪ কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রীর সুপারিশে গতবছরে ১৬ মে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট-সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্দমানে খেলাপি ঋণ মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের বিপরীতে ১০ বছরের জন্য পুনঃতফসিলের সুবিধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদহারের সীমা ঠিক করে দেয়া হয় ৯ শতাংশ। পুনঃতফসিলের আগে গ্রাহককে সুদ মওকুফ সুবিধাও দেয়া যাবে। প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এ সুবিধার জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
প্রজ্ঞাপনের ওপর উচ্চ আদালতের দু’দফা স্থগিতাদেশের কারণে আবেদন কার্যক্রম অনেক দিন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপিলের প্রেক্ষিতে এ সুবিধা নিতে আবেদনের সময় কয়েক দফা বাড়িয়ে দেয়া হয়। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পান ঋণ খেলাপি গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট নীতিমালার আওতায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি গ্রাহকরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ২০ হাজার ৭০৩টি আবেদন করেন। এর মধ্যে ঋণ পুনঃতফসিল সংক্রান্ত আবেদন পড়েছিল ১১ হাজার ২৬৪টি।
আর এককালীন এক্সিট-সংক্রান্ত আবেদনের সংখ্যা ৯ হাজার ৪৩৯। এসব আবেদনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩০৭টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ ১৯ হাজার ৬০৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এর মধ্যে ৭ হাজার ৩২৮ জন গ্রাহক ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধায় ১৮ হাজার ২০২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার ঋণ নিয়মিত করেছে। ৫ হাজার ৯৭৯ জন খেলাপি গ্রাহক এককালীন এক্সিট সুবিধার আওতায় ১ হাজার ৪০১ কোটি ৯২ লাখ টাকা নিয়মিত করেছে।
আর ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট-সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধা দিয়ে ব্যাংকগুলোর আদায় করা ডাউন পেমেন্টের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪৭ কোট ৭৮ লাখ টাকা।
এদিকে বিশেষ এ সুবিধার কারণে চলতি বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ কমে দাঁড়ায় ৯২ হাজার ৫১০ কোটি টাকায়। তবে নানা সুবিধার পরও জুন প্রান্তিকে আবারও বেড়েছে খেলাপি ঋণ।
খেলাপি ঋণের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।