সূচকের তলানিতে থাকা পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা এবং তারল্য সংকট কাটাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি সপ্তাহেই এসব বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পুঁজিবাজারের চলমান সংকট নিরসনে এবং বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে রোববার অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এ আশ্বাস দেন গভর্নর ফজলে কবির।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম এবং বিএমবিএ এর সভাপতি ছায়েদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মতিনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিএমবিএর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বিএমবিএর প্রস্তাবিত বিশেষ তহবিল নিয়েও আলোচনা হয়। গভর্নর তাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং পুঁজিবাজারের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
একইসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর শিগগিরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিস্তারিত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় তারল্য সংকট নিরসন ও প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা দিতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যা নির্দেশনা আকারে জারি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যাতে করে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতায় কাজ করে।
বিএমবিএ সভাপতি ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে এখন তারল্য সংকট চলছে। এ বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তহবিল সহযোগিতা দেয়ার বিষয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে সহযোগিতা দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। সহযোগিতার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি সপ্তাহেই প্রস্তাব আকারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর, প্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকারদের (ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান) পক্ষ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিলের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়।
প্রস্তাবনা অনুসারে, আলোচিত তহবিলের আকার হতে পারে ১০ হাজার কোটি টাকা। তহবিলের মেয়াদ হবে ৬ বছর। প্রস্তাবিত সুদের হার ৩ শতাংশ। প্রথম ২ বছর হবে গ্রেস পিরিয়ড। এ সময়ে তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ ফেরত দিতে হবে না। পরবর্তী ৪ বছরে তা সুদ-আসলে ফেরত দেওয়া হবে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, শুধু সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগের জন্য এই তহবিল থেকে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। আর এই সুবিধা ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ সব মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।