পিলখানা হত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রোববার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশদ্বারসহ আদালত অঙ্গনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
যে কোর্টের বেঞ্চে এই রায় ঘোষণা করা হবে সেই কোর্টের সামনেও দেখা যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা। এছাড়া একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই রায়কে কেন্দ্র করে আদালত অঙ্গনে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে
সুপ্রিম কোর্ট পুলিশ কন্ট্রোল রুমের এসআই খন্দকার ছোমির হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আজকের এই বাড়তি নিরাপত্তা পিলখানা হত্যা মামলার রায়ের জন্য। আমরা সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত আছি। পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।
বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ পিলখানা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এই বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হয়ে গত ১৩ এপ্রিল ৩৭০তম দিনের শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দু’টি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর করা হয় এবং মামলার বিচার চলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (মারা গেছেন), স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেন আদালত।
ওই রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ‘ডেথ রেফারেন্স’ হাইকোর্টে আসে। সেই সঙ্গে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জেল আপিল করেন। বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।