এফ-সেভেন বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রুম্মন তাহমিদের ফিরে আসার অপেক্ষায় সবাই। দেড়দিন পেরিয়ে গেলেও সবাই বিশ্বাস করতে চান, হয়তো বেজে উঠবে কারো মোবাইল, শোনা যাবে তার কণ্ঠস্বর।
তার মামা শাহাদত তাহের বলেছেন, তারা অাল্লাহর উপর ভরসা করে আছেন। বিশ্বাস করতে চান, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে হয়তো ককপিট থেকে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন রুম্মন।
শাহাদত তাহের চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, তাহমিদ ছোটবেলা থেকেই খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে। ভাইদের মধ্যে সবার বড়। বাড়ির আশ-পাশের বড়-ছোট সবার সঙ্গে তার বিশাল বন্ধুত্ব।
‘এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার পর তাহমিদের ইচ্ছা হলো পাইলট হবে। সবকিছুই ভালো চলছিলো। হঠাৎ করে সবকিছু বদলে গেলো,’ বলতে বলতে গলা ধরে আসে তার।
তাহমিদের মামা বলেন: যে মসজিদে তাহমিদ নামাজ পড়তো, সে মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে ওর পাড়া-মহল্লার সব বন্ধু, সবাই অপেক্ষা করছে, আর ওর জন্য দোয়া করছে। ‘মানুষের এ দোয়া যেনো আল্লাহ কবুল করেন।’
শাহাদত তাহের বলেন, প্রত্যেকবার বিমান উড্ডয়নের সময় বাবা-মাকে ফোন করতো তাহমিদ। সেইদিনও ফোন দিয়েছিলো। বলেছিলো, ও বিমানে একা আছে। তবে আপার (তাহমিদের মা) সঙ্গে কথা হলেও দুলাভাই (বাবা) ঘুমিয়ে থাকার কারণে কথা হয়নি।
‘এর কিছুক্ষণের মধ্যে সেই ভয়ংকর খবর,’ জানিয়ে তাহমিদের মামা বলেন, খবর শুনে সবাই হতবাক হয়ে যান।
শাহাদত চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, যখন তাহমিদ বিমানে উড়ছিলো তখন প্রচুর বাতাস ছিলো, তাই মনে হয় কোথাও সমস্যা হয়েছে। আর বিধ্বস্ত হওয়ার পর সাগরে ভাটা থাকার কারণে হয়তো তাহমিদকে এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিকূল অবস্থায়ও বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী এবং কোস্ট গার্ড সবাই এক হয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তাহমিদের পুরো পরিবারে এখন পতেঙ্গায় থেকে তার উদ্ধার হওয়ার আশায় আছেন বলে জানান মামা শাহাদত।
সোমবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটের পর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে ৬ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে সাগরে বিধ্বস্ত হয় তাহমিদ যে বিমানটিতে ছিলো সেই এফ-সেভেন।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে একসাথে দু’টি বিমান উড়েছিলো। এর মধ্যে একটি ফিরে এলেও, অন্যটি সাগরে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে এখনো নিখোঁজ তাহমিদ।