চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পারিবারিক দ্বন্দ্ব, পরে দশ হাজার টাকার চুক্তিতে হত্যা

আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যা

আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যার মূলে ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব। নিহত জরিনা খাতুনের মেয়ের স্বামী মো. নূর ইসলাম ও তার পরিবারের সঙ্গে কলহ চলছিল, সাম্প্রতিক সময়ে যা প্রকট হয়।

মেয়ের পরিবাবের কলহ দুর করতে সিরাজগঞ্জের চৌহালী থেকে আশুলিয়ার মুন্সিপাড়ায় গত ৯ নভেম্বর বিয়াই বাড়িতে বেড়াতে আসে জরিনা খাতুন ও তার বাবা আকবর আলী মন্ডল।

কিন্তু রোজিনার শ্বশুরবাড়ি চাচ্ছিল কলহ দুর করতে আর কখনোই যেন তারা না আসে তাই এক গাড়ির ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরদের দশ হাজার টাকা দিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করাতে জরিনা ও তার বাবা আকবরকে ওই মিনিবাসে তুলে দেওয়া হয়।

এ হত্যাকাণ্ডে মামলার বাদী ও রোজিনার স্বামী মো. নূর ইসলাম, ও অন্য দুই পরিকল্পনাকারী শাশুড়ি আমেনা বেগম এবং মামা শ্বশুর মো. স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা পুলিশ।

এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মিনিবাসটিও আটক করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা চালক, কন্ট্রাকটার ও দুই হেল্পারকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা।

শনিবার ধানমন্ডির পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন – পিবিআই এর সদর সপ্তরে এক সংবাদ সম্মলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

গত ১০ নভেম্বর রাতে আশুলিয়া থানা থেকে নথিপত্রসহ মামলার তদন্ত গোয়েন্দা পুলিশে (উত্তর) হস্তান্তর করা হয়। পরে তা পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে পিবিআই ঢাকা জেলা তদন্ত শুরু করে।

বনজ মজুমদার বলেন, পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্ব নিয়ে দুই পরবারের মধ্যে সম্পর্ক অবনতি হয়। এক পর্যায়ে ভিকটিমের মেয়ে রোজিনাকে তার স্বামী নূর ইসলাম ব্যাপক মারধর করা শুরু করে। রোজিনার স্বামী এবং তার শ্বাশুড়ি তাদের পরিবারের কলহের জন্য রোজিনার মা জরিনাকেই দায়ী করে। এবং তারা নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করে কিভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে জরিনাকে শিক্ষা দেওয়া যায়।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মা আমেনার পরামর্শে মামা স্বপনকে বেছে নেয় নূর ইসলাম। পরে স্বপন দশ হাজার টাকার চুক্তিতে একটি মিনিবাস ও ওই বাসের চালক, কন্ডাক্টর এবং দুই হেলপারকে ভাড়া করে।

বনজ কুমার বলেন, ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বপন শিমুলতলা বাস স্ট্যান্ডে মিনি বাসটিকে রেখে দেয়। পরে গাড়িটি টাঙ্গাইল যাবে বলে স্বপন, জরিনা ও আকবরকে বাসে তুলে দেয়।

তিনি বলেন, বাসটিতে জরিনা এবং তার বাবা ছাড়া আর কোন যাত্রী না থাকায় বাসটি আশুলিয়ার বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে রাত সাড়ে সাতটার দিকে আশুলিয়া থানার মরাগাং ব্রিজের উত্তর পাশে প্রথমে নিহতের বাবাকে মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় কন্ডাক্টর ও হেল্পার।

পরে মরাগাং ব্রিজের ৫০০ গজ সামনে জরিনাকে মারধর করে হত্যা করে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।

পিবিআই প্রধান বলেন, এখনো আমরা ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাই নি। নিহতের গলায় দাগ পাওয়া গেছে।

হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা চালক, কন্ডাক্টর ও দুই হেল্পারকে খোঁজা হচ্ছে, খুব দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান তিনি।