পৃথিবীতে পান্ডার মতো শান্ত-শিষ্ট ও ঠান্ডা মেজাজের প্রাণী খুব কমই আছে। কিউট চেহারার এই পান্ডা তার শান্ত স্বভাবের জন্য এতোটাই প্রসিদ্ধ যে যুগ যুগ ধরে চীনা রাজনৈতিক বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে পান্ডার লোগো ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আবার প্রকৃতরি বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষায় ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার’ সংস্থাটিতেও ঠান্ডা মেজাজের এই প্রাণীটির লোগো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিরাট আকৃতির প্রাণী পান্ডার ঠান্ডা স্বভাব ও মেজাজ-মর্জির পেছনে রয়েছে এক রহস্য।
একটা সময় ছিলো যখন আদর্শ মাংসাসী প্রাণী হিসেবে সিংহের সাথে পান্ডার উদাহরণ দেয়া হতো। এরাও একসময় বিভিন্ন প্রাণী শিকার করতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় প্রাণীটি একদম তৃণভোজী হয়ে গেছে।
তাহলে এটাই কি এদের ঠান্ডা মেজাজ আর শান্ত স্বভাবের পিছনের রহস্য? হ্যাঁ তাই।
এর বিস্ময়কর জনপ্রিয়তা আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও পান্ডাদের ওপর গবেষণা করা অনেকটা কঠিন। বেইজিং চিড়িয়াখানার ৫টি পান্ডা ও ফোপিং জঙ্গলের ৩টি পান্ডার ওপর গবেষণার করে দেখা গেছে পান্ডাদের মেটাবলিক রেট (পাকস্থলি থেকে নি:সৃত অ্যানজাইমের হার) খুব কম বলে তারা মাংস সহজে হজম করতে পারেনা। বলা যায় বিরাট আকৃতির এই প্রাণীদের হজম শক্তি খুব কম। আর এই কারণেই তারা অনেকটা অলস প্রকৃতির। এমনকি শরীরের আকারের তুলনায় এদের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গগুলো খুব ছোট।
অনেক প্রাণী আছে যারা শুধু ঘাস, লতা-পাতা খেয়ে বেঁচে থাকে, পান্ডারা সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। কারণ পান্ডারা অনেক বেশি মাত্রায় লতা-পাতা বিশেষ করে সবধরণের বাঁশ প্রচুর মাত্রায় খেয়ে থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে একটি পান্ডা প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ কেজির মতো বাঁশ খায়। অন্যান্য প্রাণীদের মতো সক্রিয় নয় বলে তাদের শরীর থেকে অ্যানার্জি খরচ হয় কম।
পুরোপুরি তৃনভোজী বলে পান্ডাদের থাইরোড হরমোনের মাত্রা খুব কম। আর যেসব প্রাণীদের থাইরোড হরমোনের মাত্রা কম থাকে তাদের বেশি শীত লাগে। খুব সক্রিয় নয় বলে এরা স্থির থাকতে পছন্দ করে। হয় ঠান্ডা ও শান্ত স্বভাবের।