নদ-নদীর পানি কমে আসলেও বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ কমছে না। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের অসহায় মানুষদের দুর্দশা আরও বাড়ছে।
শরীয়তপুর
শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর পানি ১৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মা তীরবর্তী নড়িয়া উপজেলায় ৬টি, জাজিরায় ৯টি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৭টি করে তিনটি উপজেলার মোট ২২টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ ও আংশিক প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ।
বন্যায় দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে জেলার প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত।
চাঁদপুর
চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের ফসলের মাঠ, ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের, পানের বরজ, রোপা আমন ধান, রাস্তাঘাট ও মসজিদ মাদ্রাসা তলিয়ে গেছে।
জোয়ারের পানি বেড়ে হাইমচরের চরভৈরবি, কাটাখালি, নয়ানী লক্ষীপুর, নীলকমলসহ বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বন্যায় বসত বাড়ির ক্ষতি হওয়ায় ঘরে ফিরতে পারছে না মানুষজন। পাশাপাশি বানভাসি মানুষের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা।
তাছাড়া দু-দফা পানি বৃদ্ধিতে আমনসহ বিভিন্ন সবজির প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। নদ-নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের চারণভূমি নষ্ট হওয়ায় দেখা দিয়ে গো-খাদ্যের সংকট।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে ও কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি দ্রুত কমে এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে যমুনার নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কাজিপুর পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
যমুনা নদীর সঙ্গে জেলা অভ্যন্তরীন নদ-নদী ফুলজোড়, করতোয়া, ইছামতি, বড়াল নদী ও চলনবিলের পানি কমতে থাকলেও জেলার ৫টি উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ বাড়ি-ঘর থেকে পানি না নামায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
তাছাড়া পানি কমার সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ বালাই। বিশেষ করে শিশুরা রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও রোগাক্রান্ত হচ্ছে।