প্রতি শীতেই মধ্য এশিয়া পাড়ি দিয়ে হাজারে হাজারে অতিথি পাখি হোবারা বাস্টার্ড আসে পাকিস্তানে। মূলত উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মরু অঞ্চলে বাস বিপন্ন প্রজাতির এই পাখি। যা শিকারের সুযোগ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সাথে পাকিস্তান চালায় সফট ডিপ্লোমেসি। হুমকির মুখে থাকা এই প্রজাতির পাখিটি প্রকৃতি সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় অাছে। এবার এই পাখিটির প্রতি এবার সদয় হয়েছেন ইমরান খান! দলীয় ক্ষমতাসীন অঞ্চলে এর শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছেন তিনি। তবে পাখি প্রীতি নয়, সরকারবিরোধী জোরালো অবস্থান প্রকাশের রাজনীতি হিসেবেই একে ভাবছেন সবাই।
একসময় বিপুল সংখ্যায় থাকা হোবারা বাস্টার্ড এখন রয়েছে সাকুল্যে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ। পাকিস্তানসহ অধিকাংশ দেশেই এর শিকার নিষিদ্ধ হলেও মধ্যপ্রাচ্যের অভিজাতরা প্রতি বছর এই পাখি শিকারে বিশেষ অনুমোদন। ‘এর মাংস যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক’ এই বিশ্বাসে বা স্রেফ খেলার ছলে দশ দিনে ১০০ পাখি শিকারের অনুমতি পায় তারা। এই সীমা অধিকাংশ সময়েই লঙ্ঘন করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় এবং সংরক্ষণবিদদের। ভিন দেশ ভ্রমণই এর সংখ্যা কমার প্রধান কারণ মত আইইউসিএনের।
তবে এবার সেই কূটনীতিতে বড় ধাক্কা খাবে পাকিস্তান ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক এবং তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান তার এলাকায় শিকার নিষিদ্ধ করায়। খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) প্রদেশের নেতৃত্বে থাকা দলটির প্রধান রোববার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কাতারের যুবরাজের একটি দল কেপিসহ অন্যান্য এলাকায় শিকারের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানে এসেছে, এমন খবরের পরই এই ঘোষণা। কেপি প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খানের এই এলাকায় হোবারা বাস্টার্ড শিকারে কাতারের যুবরাজ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন আলি আল-থানিকে কেন্দ্রীয় সরকার অনুমতি দিয়েছেন, গত সপ্তাহে এমন খবর প্রকাশ পায়।
২০১৪ সাল থেকেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন ইমরান। বিরোধের পালে জোর হাওয়া লাগে পানামা পেপার ফাঁসে লন্ডনে নওয়াজের অঘোষিত সম্পদ প্রকাশের পর। ‘কোন ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার’ অস্বীকার করা নওয়াজের বিরুদ্ধে মামলায় তার পাশে দাড়ায় কাতার। কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাইখ হাম্মাদ বিন জসীম আদালতে শরীফের সমর্থনে একটি চিঠি উপস্থাপন করে, যেখানে বলা হয় নওয়াজ শরীফের মৃত বাবা মিয়া মোহাম্মদ শরীফের সাথে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিলো। এতে কাতারের প্রতি স্বভাবতই ক্ষুদ্ধ হন ইমরান।