আতঙ্কের মুখে পড়েও শেষ পর্যন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। পচা শামুকে পা কাটার প্রবাদটাই প্রায় যখন সত্যি হতে চলেছিল, তখনই কোনো রকমে জয় এনে দেন ইমাদ ওয়াসিম! আফগানিস্তানের করা ২২৭ রানের জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল পাকিস্তান। শেষঅবধি তারা ম্যাচটা জিতে নেয় ৩ উইকেটে। এই জয়ে সেমিফাইনালের আশা বেঁচে আছে সরফরাজ আহমেদের দলের।
ভারতের কাছে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু বিশ্বকাপে সব ম্যাচে হারা আফগানিস্তানের কাছে তারা যে এভাবে বিপদে পড়বে, সেটা সরফরাজরা হয়তো ভাবতেই পারেননি!
পাকিস্তানের এমন জয় ছাপিয়ে সামনে এসেছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক গুলবাদিন নায়েব। তার সিদ্ধান্তের জন্যই আফগানিস্তান ম্যাচ হেরেছে বলে অভিযোগ সমর্থকদের। ভক্তদের ক্ষোভ, পাকিস্তানকে ‘জিতিয়ে’ছেন তিনিই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো তোপের মুখে গুলবাদিন। তাকে সবচেয়ে স্বার্থপর অধিনায়কও বলছেন কেউ কেউ।
ম্যাচের শেষ চার ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪৬ রান। তার আগে আঁটসাঁট বোলিংয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছিলেন আফগান স্পিনাররা। কিন্তু ৪৬তম ওভারে স্পিনারদের না দিয়ে নিজেই বোলিংয়ে আসেন গুলবাদিন। ওই ওভার থেকে ১৮ রান নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
ওই ওভার থেকেই আলোচনা, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেনো নিজেই বোলিংয়ে এলেন তিনি। সমর্থক ও ক্রিকেট বিশ্লেষকদের এই আলোচনা যেন থামছেই না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলবাদিনকে তুলোধুনা করছেন সমর্থকরা। তার সিদ্ধান্তে সমালোচনা করছেন সাবেক অনেক ক্রিকেটারও।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ যেমন বলেছেন, ‘ম্যাচের ৪৬তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচ আফগানিস্তানের হাতেই ছিল। কিন্তু অধিনায়কের ভুল কৌশলের কারণে শেষ পর্যন্ত হারতে হল তাদের। তবে ইমাদ ওয়াসিম দারুণ খেলেছে।’
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন আফগানিস্তানের পরাজয় কোনো শব্দে ব্যাখ্যা করতে পারেননি বলেই হয়তো শুধু লিখেছেন, ‘গুলবাদিন !!!!!!!!!!!’
গুলবাদিনকে স্বার্থপরতার অভিযোগে বিদ্ধ করেছেন এক সমর্থক। সুবোধ ইয়েওল নামের ওই সমর্থক টুইটারে লিখেছেন, ‘আমাদের দেখা সবচেয়ে স্বার্থপর অধিনায়ক গুলবাদিন। পাশাপাশি দলে অনেক ভালো ব্যাটসম্যান থাকলেও ব্যাটিংয়ে তিনিই ওপেন করতে চান। ম্যাচ যখন আফগানিস্তানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তখন তিনি বোলিং করতে এলেন এবং ম্যাচটা স্রেফ ছেড়ে দিলেন।’
আরেক সমর্থকের বক্তব্যও প্রায় একইরকম। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি, গুলবাদিন নায়েব অন্যতম স্বার্থপর ক্রিকেটার।’
এক সমর্থক প্রশ্ন তুলে বলেছেন, তার মতো আহাম্মক কীভাবে আফগানিস্তানের অধিনায়ক হয়?
একের পর এক অভিযোগের টুইটে সমর্থকরা বলছেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন গুলবাদিন। পাকিস্তানকে জয়ে সাহায্য করায় তাকে অভিনন্দন। তাকে এই মুহূর্তে দল থেকে বাদ দেয়া হোক, না হলে অন্তত অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হোক। তার বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের তদন্ত করা হোক। এমন অনেক কিছু।
সমর্থকদের কেউ একজন উইকিপিডিয়ায় গুলবাদিনের তথ্য পরিবর্তন করে লিখেছেন, ‘আসগর আফগানকে সরিয়ে গুলবাদিন নায়েবকে ওয়ানডে অধিনায়ক করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড- পিসিবি।’
অপর এক সমর্থক কিছু না লিখে শুধু একটি ছবি শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের হাত থেকে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিচ্ছেন গুলবাদিন নায়েব। ম্যাককালামের হাত থেকে অবশ্য ম্যাচসেরার পুরস্কার নেন ইমাদ ওয়াসিম।