পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পাঁচ বছরের শিশু তাফানুম তাহিকে ধর্ষণ করে রিফাত। পরে তাহি কান্না করলে আর বাসায় জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে রিফাত ইট দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। সম্পর্কে রিফাতের খালাত বোন তাহি।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত সাড়ে এগারোটায় র্যাব-১ এর আভিধানিক দল টঙ্গী বোর্ডবাজার এলাকার থেকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি মো. রিফাতকে (১৬) গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন রিফাত তার পিতার কর্মস্থল স্থানীয় টার্কি মুরগির ফার্ম হতে বাসায় আসার সময় তাহির সঙ্গে তার নানির বাড়ির পাশে তিন রাস্তার মোড়ে দেখা হয়। তাহি জানতে চায় তার নানি কোথায় আছে? পরে তাহিকে নানীর কাছে নিয়ে যাবার মিথ্যা কথা বলে বাড়ির পাশে কাশফুলের জঙ্গলে নিয়ে যায় ও তাহিকে ধর্ষণ করে রিফাত। তাহি জানায় বাড়িতে বলে দিবে, এ কথা শুনে পাশে পড়ে থাকা একটি ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে রিফাত। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
সারওয়ার কাশেম জানান, রিফাত স্থানীয় উলুম মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। সে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়েই তাহিকে ধর্ষণ করে।
এক প্রশ্নের জবাবে সারওয়ার কাশেম বলেন, পর্নোগ্রাফির প্রভাবেই এমন ঘটনা ঘটেছে, ইতিমধ্যে সরকার বেশকিছু পর্নোগ্রাফি ওয়েব সাইট বন্ধ করেছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করা হলে ধর্ষণ অনেকটা কমে আসবে।
সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন শিশু তাহির মা আবিদা সুলতানা ও বাবা মো. হুমায়ূন কবীব।
জানতে চাইলে তারা দুজনেই দোষী রিফাতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আবিদা সুলতানা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: রিফাতদের পারিবারিক অবস্থা খারাপ থাকায় রিফাতের বাবাকে টার্কি ফার্মে চাকরি দিয়েছিলাম। রিফাত আমার মামাতো বোনের ছেলে, চেয়েছিলাম এখানে চাকরি করলে তাদের দুর্দশা কেটে যাবে। কিন্তু উল্টো আমার বিপদ হল, আমার ছোট মেয়েটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করল।
নিজের শিশু সন্তানের হত্যাকারীর ফাঁসি চেয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন: আমি চাই না আর কারো সন্তানের এ অবস্থা হোক। পাশাপাশি পরিবারকেও সচেতন হতে হবে।
গত ২৭ জানুয়ারি গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন শরীফপুর এলাকায় কাশবন থেকে পাঁচ বছরের শিশু তাফানুম তাহার লাশ উদ্ধার করা হয়।তাহা স্থানীয় মাতৃছায়া আইডিয়াল স্কুলের নার্সারি শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
ঘটনার দিন সকাল সাড়ে দশটায় বাসা থেকে নানার বাড়িতে গোসল করতে যাওয়ার পর তাকে দেখতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে এক পর্যায়ে ওই দিন বিকেল তিনটায় বাড়ির পাশের কাশবনে তাহার মরদেহ পাওয়া যায়।