ছাত্রদের চলমান আন্দোলন আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। আমরা এই ঘুণে ধরা সমাজের পঙ্কিলতা নিয়ে সগৌরবে বেঁচে আছি নির্লজ্জের মত। আমাদের চপেটাঘাত দিয়ে ছাত্ররা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমরা কত আপোস করে প্রত্যহ বেঁচে থাকি। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে শুরু করে আইনপ্রণয়নকারী কারো গাড়ির ড্রাইভারেরই লাইসেন্স নেই। শুধু এটুকু নয় আরো কত দুর্বৃত্তপনার ভেতর বেঁচে আছি সেটা স্পষ্ট হয়ে গেলো শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে।
জাবালে নূর পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থী নিহতের জেরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসার পর বের হয়ে এসেছে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা কতটা দৈনদশায় আছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি অরাজক পরিস্থিতি চলছে। এগুলোর অবসান হওয়া উচিত। সরকারের উচিৎ এইসব অনিয়ম বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা করা।
ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে পরিবহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমরা আরো অবাক বিস্ময়ে দেখলাম অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এই ধর্মঘট করে পরিবহন শ্রমিকরা কী বোঝাতে চায়? এই ধর্মঘটের মাধ্যমে শিশুদের আন্দোলন ব্যাহত করে কী ফায়দা লুটতে চায় তারা?
সরকারের আশ্বাসে যখন আশ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যাচ্ছে, তখন এই পরিবহন ধর্মঘট কেন? এতবড় আন্দোলনের পরও কি মালিক-শ্রমিকরা চায় তাদের নৈরাজ্য বহাল থাকুক? অথচ নিজেদের সংশোধন করে তারা জনগণকে প্রকৃত সেবা দেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারতো। সেটা যেহেতু তারা করছে না, সরকারকে এখনই এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যথায় এই আন্দোলন নিয়ে অন্যরা ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবে, যা সরকারের জন্য আরো বিপজ্জনক সংকট তৈরি করতে পারে।