ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পৃথক কারণে পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যান করেছেন কিংবদন্তী শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
সামাজিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পদ্মভূষণ সম্মাননা দেয়া হয়েছিল। ঘোষণার পরেই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি পদ্মভূষণ সম্মান প্রত্যাখ্যান করছেন।
কিন্তু তিনি এই সম্মান প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে কোনো কারণ দেখাননি। দলীয় সূত্র বলছে, মতাদর্শগতভাবে বুদ্ধদেব বিজেপির তীব্র বিরোধী। তিনি কিছুদিন আগেও বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছেন। তাছাড়া সিপিএমও এই ধরনের পুরস্কার নেয়ার বিরোধী। এর আগে মনমোহন সিং সরকার জ্যোতি বসুকে ভারতরত্ন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। দলও চায়নি।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী দিতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি তা নিতে চাননি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে যিনি এই সম্মান দেয়ার কথা সন্ধ্যাকে জানিয়েছিলেন, তাকেই তিনি বলে দেন, পদ্মশ্রী নেবেন না। শ্রোতাদের ভালবোবাসার পুরস্কার নিয়েই তিনি সন্তুষ্ট থাকবেন।
কিংবদন্তি শিল্পী ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে আরো জানিয়েছেন, জীবনের এই প্রান্তে এসে পুরো ব্যাপারটিতে অত্যন্ত অপমানিত এবং অসম্মানিত বোধ করেছেন তিনি। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পদকপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৯৮৭ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ও কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মাননা ফিরিয়ে দেন।
এদিকে শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতোই এই পুরস্কার ফেরালেন আরও এক সংগীতশিল্পী পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। ফারুখাবাদ ঘরানার তবলাশিল্পী তার নিজের জগতে ইতিমধ্যেই প্রবাদপ্রতিম। নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি শঙ্কর, আলী আকবর খান, আমজাদ আলি খানের মতো শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান,‘পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ার সময় পেরিয়ে গিয়েছে। অনেক দিন আগেই তার পদ্মশ্রী পাওয়া উচিত ছিল। এখন এত দিন পরে এসে পদ্মশ্রী পাওয়াটা তার মতো প্রবীণ শিল্পীর জন্য সম্মানজনক নয়।’
৬৭ বছর পেরিয়ে গিয়েছে এই শিল্পীর। বহু যুগ ধরেই তিনি ধ্রুপদী সংগীতজগতে অত্যন্ত নামকরা। তার পরে এই ঘটনায় তিনি মোটেই যে সম্মানিত বোধ করেননি, তা জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে।