দীর্ঘ সাত বছর দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবশেষে গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন চাপের মুখে থাকা ড. আতিউর রহমান। মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় নৈতিক দায়িত্ব থেকে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান ড. আতিউর।
মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনাটি প্রথমে গোপন রাখাসহ এ ব্যাপারে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের আশায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে করেই নিয়ে গিয়েছিলেন পদত্যাগপত্র।
পদত্যাগপত্রে প্রথমেই ড. আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংক জালিয়াতি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ঘটনার পরদিনই বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রধানকে এ ব্যাপারে জানানো হয়। এর সঙ্গে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলোকে সনাক্ত করা এবং ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করাকে গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই এটিএম জালিয়াতির ঘটনা ঘটায় পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে গিয়েছিলো। তাছাড়া ঘটনাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতেও সময় লেগেছিলো। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীকে জানাতে দেরি হয়েছে বলে পদত্যাগপত্রে জানান সাবেক গভর্নর।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে চিঠিতে ড. আতিউর বলেন, ‘আমি যা করেছি দেশের স্বার্থে এবং টাকা উদ্ধারের কৌশল হিসেবেই করেছি। বিবেকের তাড়নায় করেছি।’
তিনি বলেন, এরপর হারানোর অর্থের কিছু অংশ ফেরত আনার পরও ‘যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতার প্রশ্ন উঠেছে এবং প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাই গভর্নর পদে আমার থাকাটা সমীচীন মনে করছি না।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং সবার সাফল্য কামনা করে পদত্যাগপত্র শেষ করেন ড. আতিউর রহমান।