মাথায় ঝুলে ছিল অনাস্থা ভোটের ঝুঁকি। ভোটে হারলে বার্সেলোনা ইতিহাসে প্রথমবার কোনো সভাপতির লজ্জার বিদায় নিশ্চিত হতো। আগেভাগে সম্মান নিয়ে পদত্যাগ করাকেই তাই শ্রেয় মনে করলেন জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউ। তার সঙ্গে পদ ছেড়েছেন ফুটবল ক্লাবটির অন্য পরিচালকরাও।
মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ের পর সভাপতি বার্তেমেউ ও তার বোর্ডের সব পরিচালক পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। আসছে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করে নতুন সভাপতি নির্বাচিত করতে হবে কাতালান ক্লাবটিকে।
৫৭ বছর বয়সী ফুটবল প্রশাসক বার্তেমেউ ২০১৪ সালে বার্সার সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত মেয়াদ ছিল তার। তার আমলে কাতালানরা চারটি লা লিগা ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে।
শেষ একযুগে প্রথম ট্রফি ছাড়া গত মৌসুম। ঘরের ছেলে, দলের সেরা তারকা ও অধিনায়ক লিওনেল মেসির ব্যুরোফ্যাক্স বার্তা দিয়ে ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছা জানানো। মেসি-পিকেসহ সিনিয়র খেলোয়াড়দের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপবাদ ছড়ানোর জন্য ক্লাবের টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠান নিয়োগের অভিযোগ। লুইস সুয়ারেজকে একরকম তাড়িয়ে দেয়া। কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দেকে মৌসুমের মাঝে ছাঁটাই। এমন শত বিতর্কে বার্তেমেউ জড়িয়ে পড়েছিলেন।
ফলাফল, ক্লাবের ভেতরে-বইরে চাপে পড়া। পরিস্থিতি এড়াতে একটাই উপায় খোলা ছিল বার্সা সভাপতির সামনে, আগেভাগে সম্মান নিয়ে পদত্যাগ করা। যদিও সোমবার তিনি সদর্পে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আর যাই হোক নির্ধারিত সময়ের আগে গদি ছাড়ছেন না।
অন্যদিকে গণভোট কবে হবে সে ব্যাপারে কাতালান সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন বার্সার বোর্ড সদস্যরা। সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছিল নভেম্বরের ১ অথবা ২ তারিখ। অনাস্থা ভোট যেন অনুষ্ঠিত না হয়, সেজন্য কাতালান সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট পেরে আরাগোনেসের কাছে চিঠিতে অনুরোধ জানিয়েছিল বার্তেমেউ নিয়ন্ত্রিত বার্সা বোর্ড। মহামারীর সময়ে অনাস্থা ভোটের নামে জনসমাগম সংক্রমণকে আরও উস্কে দেবে, এমন ঢাল ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
বুধবার ভোটাভুটির ব্যাপারে নিজের রায় জানানোর কথা ছিল কাতালান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। সেখানে নিজেদের অনুরোধ ধোপে টিকছে না, এমন আভাস পেয়েই আগেভাগে পদত্যাগের পথে হাঁটলেন বার্তেমেউ, ইউরোপের কিছু সংবাদমাধ্যম এমন ইঙ্গিতও দিচ্ছে। তাতে ন্যু ক্যাম্পে আগামী বছরে নিজের মেয়াদ শেষ না করেই ক্ষমতা ছাড়তে হল বার্তেমেউকে।